Friday, 19 July 2019

ট্রেনিং পর্ব ০১

হাইফ্রাইয়ার গিরিবাজ সম্পর্কে প্রায় আমার কাছে অনেকেই জানতে চান কিভাবে ট্রেনিং দেবো? যা আমার পক্ষে একবারে অল্প সময়ে উত্তর দেওয়া সম্ভব না, তাই মনে করলাম ধারাবাহিক ভাবে যতটা সম্ভব নতুনদের জন্য পর্যায়ক্রমে তুলে ধরার চেষ্টা করবো। আমার ধারনা আমি যদি আমার দীর্ঘ দিনের দেখা অভিজ্ঞতা তুলে ধরার চেষ্টা করি, তাও বোধ হয় ১০% তুলে ধরতে পারবো কিনা সন্ধেহ। কেননা, এত বিশাল এর ব্যাপকতা যা এত অল্প পরিশরে ও আমার মত সামান্য জানা মানুষের পক্ষে সম্ভব হবে না। হয়তো বা মাঝ পথে আমাকে থেমে যেতে হতে পারে, তার পরেও চেষ্টা করবো যতটা নতুনদের জন্য তুলে ধরার। হয়তোবা আমার জানা অভিজ্ঞতা অনেকের সাথে নাও মিলতে পারে অথবা আমার ভুল হতে পারে, সেগুলি কমেন্টের মাধ্যমে তুলে ধরলে আমি সহ অন্যদের যথেষ্ট উপকার হবে। তাছাড়া ট্রেনিং এর কথাবার্তা গুলি ধারাবাহিকভাবে উপস্থাপন নাও হতে পারে আমার অজ্ঞতার কারনে, সেটাও অনেকের মাথায় রাখতে হবে, যখন যেটা আমার মনে পড়বে সেটাই তুলে ধরার চেষ্টা করবো।
তাছাড়া আমাদের সকলকে কিছু কথা মাথায় রাখতে হবে, কবুতর কিন্তু মানুষের মুখের কথা বুঝে না, তাই মুখে বলে মানুষদের যেমন ট্রেনিং দেওয়া হয় সেই রকম কিছু না। যেমন কবুতরকে বল্লাম, বাজি খাও, আর অমনি বাজি খাওয়া আরম্ভ করলো, আবার বল্লাম, নেমে আসো আর সাথে সাথে ড্যানা বন্ধ করে নেমে আসবে সেরকমটা কিন্তু কিছুই না। মুলত, কবুতরকে কিছু অভ্যাসে পরিনত করাকেই ট্রেনিং হিসাবে ধরা হয়।
ট্রেনিং সম্পর্কে বলার আগে নতুনদের জন্য আমার কয়েকটা কথা থাকবে, সেটা হলো,
(০১). আগে ধারনা করতে হবে ও সম্ভব হলে জানতে হবে কবুতরটির জাতের মধ্যে উড়ার ক্ষমতা আছে কতটুকু?
(০২). আপনার বাসস্থান ও পারিপাশ্বিক পরিবেশ ও আবহাওয়ার জন্য কোন ধরনের গিরিবাজ কবুতর উপযোগী?
(০৩). কোন আবহাওয়ায় কোন জাতের কবুতর ভাল পারফর্ম করে।
(০৪). কোন বয়সে এসে কবুতর ভাল পারফর্ম করে?
(০৫). ......................................................
( চলবে ----- এবং দোয়া করবেন, যেন শেষ পর্যন্ত যেতে পারি। ইনসাআল্লাহ, এবার আপনাদের সাথে অনেক লম্বা পথ পাড়ি দেওয়ার ইচ্ছা আছে )

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

Thursday, 18 July 2019

ট্রেনিং পর্ব ০২

(০৫). দিনের কোন সময় ট্রেনিং আরম্ভ করা ভাল?
(০৬). ট্রেনিং কালীন সময়ে খাবার কখন দিলে ভাল হয় এবং কি ধরনের খাবার দেওয়া ভাল?
(০৭). আকাশ ও আবহাওয়া সম্পর্কে ধারনা রাখা।
(০৯). বাজপাখির হাত থেকে কিভাবে যতটা সম্ভব বাঁচায়ে কবুতর ট্রেনিং দেওয়া যায়।
(১০). কবুতর যতটা সম্ভব সুস্থ রাখা।
(১১). কবুতরের খোপ কেমন হওয়া ভাল?
(১২). বামের উপকারিতা ও অপকারিতা।
(১৩). নর-মাদি আলাদা করে পালন ও একসাথে পালন করার ফলে ভাল দিক ও খারাপ দিক।
(১৪). মোল্টিং এর সময় কি ধরনের পরিচর্যা করা ভাল?
(১৫). অতিরিক্ত ( বস্তা দাবড় ) প্রেশার দিয়ে ট্রেনিং এর অপকারিতা।
(১৬). অতিরিক্ত বাতাসে ট্রেনিং করালে পরবর্তীতে কি ফল দেয়?
(১৭). বৃষ্টিতে ট্রেনিং করালে পরবর্তীতে কি ধরনের সুবিধা ও অসুবিধার সম্মুক্ষিন হতে হয়?
(১৮). মেমোরী
ইত্যাদি ইত্যাদি .....
আমি জানি এখানে ধান বানতে আমার অনেক গীত গাওয়া হয়ে যাবে, কিন্তু উপায় নেই, কারন ধারাবাহিকভাবে হাইফ্লাইয়ার কবুতরের ট্রেনিং বিষয়ক কোনো কিছু লিখতে গেলে অনেক কঠিন একটা কাজ, বিশেষ করে আমার জন্য।
যাহোক, হয়তোবা কথনও কথনও আপনাদের কাছে রিপিট কথাবার্তা মনে হবে। তার পরেও কয়েকটি মৌলিক কথা মাথায় রাখলেই হলো। যেমন, হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের ট্রেনিং মানে, কবুতরের কিছু খারাপ অভ্যাস বন্ধ করানো আর কিছু ভাল অভ্যাস তৈরী করানোই মুল উদ্দেশ্য থাকবে। পূর্বে বলেছি কবুতর মানুষের মত কথা বুঝে ট্রেনিং নেয় না অথবা বুঝে না, ওরা শুধু অভ্যাসের দাস ও অনুকরন প্রিয়। আর একটি মুল কথা, আপনি যত ট্রেনিংই দেন না কেন, কবুতরের জাতের মধ্যে উড়া না থাকলে কখনই ভাল ফল পাবেন না এবং যদি জাতের মধ্যে উড়া থাকে তবে, পায়ে পাথর বেধে রাখলেও উড়া থামাতে পারবেন না।
**** আরো একটি মজার ও গুরুত্বপূর্ন গোপন বিষয় আজ আপনাদের কাছে প্রকাশ করছি, যা ইতিপূর্বে কেউ প্রকাশ করেছেন কিনা জানি না, তা হলো, হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর দীর্ঘ সময় উড়ার জন্য রেসার কবুতরের মত অতিরিক্ত ভাল স্বাস্থ্য ও শারিরিক শক্তির উপর নির্ভরশীল না। একটু ভাঙ্গায়ে বলি, হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর উড়তে উড়তে, মনে করেন ৬-৭ + ঘন্টা উড়ার পরে শরীর পানি শুন্যতায় পড়ে এবং তখন যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে ইচ্ছা করে চাইলেও সহজে নেমে আসতে পারে না, কারন নিজের উপর দখল থাকে না এবং সুতা ছেড়া ঘুড়ির মত বাতাসে একপ্রকার ভাসতে থাকে। তাহলে মোটামুটি বুঝতে পারতেছেন, কোন পর্যায়ের কবুতর, শারিরিক গঠন ও প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য অবস্থা ও ট্রেনিং ইত্যাদি হলে এই ধরনের ঘটনা ঘটবে? অনেকে আবার এই ধরনের সুবিধা নেওয়ার জন্য কবুতরের বাজির তোড় ব্যাবহার করেন যাতে সহজে না নামতে পারে।
ধন্যবাদ।।

ছবি অ ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ০৩

ট্রেনিং তো আরম্ভ করবেন, ভাল কথা, কিন্তু কি ধরনের কবুতর নিয়ে আরম্ভ করবেন? অবশ্যই ভাল মানের ও জাতের কবুতর নিয়ে আরম্ভ করবেন, এইটাই স্বাভাবিক। এখন ভাল কবুতর চিনবো কি করে? এটা খুব কঠিন একটা ব্যাপার, যদি আগের থেকে জানা না থাকে এই কবুতরগুলি ভাল মানের। তাছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভাল কবুতর মানে ৬-৭ + ঘন্টা এবং খুব ভাল কবুতর ৯-১০+ ঘন্টা উড়াকে ধরা হচ্ছে। অনেকেই ভাল কবুতর চেনার জন্য চোখ, ড্যানা, লেজ, নখ, ঠোট, বুকের হাড্ডির দৈর্ঘ্য ইত্যাদির উপর নির্ভর করে এবং কেউ কেউ এইভাবে ভালই চেনেন, কিন্তু আমার ধারনা, তারা কেউ ১০০% বলতে পারবেন না, এই কবুতরটি সঠিকভাবে লালন-পালন ও পরিচর্যা করার পরে ৭-৮ + উড়বে। তাছাড়া ভালোর তো শেষ নেই। তাই ভাল খুজতে খুজতে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যাবে, তার চেয়ে বরংচ কোন কোন বৈশিষ্ট থাকলে ধারনা করা যাবে কবুতরটি খুব ভাল নাও হতে পারে এবং এইটাই বোধ হয় কিছুটা সহজ পদ্ধতি। (০১). চোখ দেখে বুঝার চেষ্টা করতে হবে, গিরিবাজ কবুতর ব্যাতিত অন্য কোনো জাতের কবুতরের সাথে জোড় দিয়ে কবুতরটির জাত তৈরী করা কিনা? (০২). চোখ যদি যথেষ্ট উজ্বল না হয় । (০৩). চোখের গিয়ার তুলনামূলক মোটা ও লালচে ভাবের কিনা? ( এটা একান্তই আমার দেখা অভিজ্ঞতা, ব্যাতিক্রম থাকতে পারে ) (০৪). শারীরিক গঠন লেজ পাকের তুলনায় শরীর বড় কিনা? (০৫). পা অতিরিক্ত মোটা কিনা ? (০৬). পা অতিরিক্ত লম্বাটে কি না? (০৭). খাদ্য থলি দেখতে বড় দেখায় কিনা? প্রয়োজনে ঠোটে মুখ দিয়ে হালকা ফু দিয়ে বেলুনের মত ফুলায়ে দেখতে পারেন । (০৮). ঠোট অতিরিক্ত মোটা এবং কিছুটা রেসিং হোমারের আকৃতির কিনা ও নাকের ফুল অতিরিক্ত ফোলানো কিনা? (০৯). ড্যানা খুলে ধরার সময় হালকা শক্তি প্রয়োগ করতে হয় কিনা? (১০). হাতে নিয়ে ঝাকি দিলে লেজ অতিরিক্ত খুলে যায় কিনা? (১১). লেজের গঠন এলোমেলো কিনা? (১২). শরীরের তুলনায় গলা অতিরিক্ত লম্বা অথবা খাটো কিনা? (১৩). অতিরিক্ত ঘাড় কাপায় কিনা? (১৪). পায়ে অতিরিক্ত মোজা আছে কিনা? (১৫). এছাড়া একদম নতুন পালকদের কিছু কিছু রঙের ও চেহারার কবুতর যে গুলো কখনই ইতিপূর্বে ভাল রেজাল্ট করেনি, সেগুলো রিস্ক নিয়ে না পালন করাই শ্রেয় এতে সময়ের অপচয় হওয়ার সম্ভবনা বেশী থাকবে, ইত্যাদি ইত্যাদি, এতক্ষন যে হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের বৈশিষ্ঠ গুলো বলা হয়েছে তা সাধারন ভাবে কিছুটা ধারনা নির্ভর কবুতরের নিম্নমানের লক্ষন হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে, যে গুলো দিয়ে ৬-৭ + ঘন্টা দম করানো অনেক সময় কঠিন হয়ে যায়, তবে এমন না যে এর যেকোনো দুই-একটা লক্ষন থাকলেই যে একদম খারাপ হয়ে যাবে, এমনটা আবার ১০০% সঠিক না। এছাড়া আরো কিছু খারাপ বৈশিষ্ট, যে গুলো আকাশে দিয়ে পরীক্ষা করতে হয, যেমন, (০১). সার্বক্ষনিক দ্রুতগতিতে উড়া একটি খারাপ লক্ষন, একটি কথা প্রচলিত আছে, যে গরু বেশী দুধ দেয় সে ধীর পায়ে হাটে, ঠিক তেমনি যে কবুতর ধীরে ধীরে উড়ে সেই কবুতর দীর্ঘ সময় উড়তে সক্ষম, ও বেশীরভাগ সময় দেরীতে টিপে লাগে।(০২) মেমোরী কেমন? ................................ চলবে ।। ধন্যবাদ।
*** বিঃদ্রঃ হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ খারাপ কবুতরের আরো অনেক সুক্ষ সুক্ষ বৈশিষ্ট আছে, যা এখানে ও আগামীতে খোলাসা ভাবে কখনও প্রকাশ করা হবে না, কেননা, তাতে অনেক সময় ব্যাতিক্রম হওয়ার কারনে বিতর্কের সৃষ্ঠি হবে ও আমি বিতর্কের মধ্যে পড়বো, যা আমার কাম্য নয়। সব কিছুতে কিছু ব্যাতিক্রম থাকে, তাই আমি চেষ্টা করবো নতুনদের ঢালাওভাবে অল্প পরিশরে কিছু তথ্য জানানো যায় কিনা। তাছাড়া আমি যেটা সহজভাবে বুঝি, কবুতর না উড়ায়ে ভাল খারাপ বুঝতে পারা ধারনা নির্ভর ছাড়া আর কিছুই না।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন - 
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ০৪

গত পর্বের সুত্র ধরে এই পর্বে প্রথমে হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের মেমোরী / স্মরনশক্তি নিয়ে আরম্ভ করতে হবে, যা হোক আমরা অনেকেই একটা কথা বলি হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের যদি মেমোরী না থাকে তাহলে সেই কবুতর না পালন করাই ভাল। একথা্টা যেমন সত্য তেমন আবার দেখা গেছে অতিরিক্ত মেমোরী থাকা হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর খুব একটা ভাল পারফর্ম করে না। কারন হিসাবে আমার কাছে যা মনে হয়েছে, তা হলো এই ধরনের অতিরিক্ত মেমোরীওলা কবুতরগুলি বেশী ঘরমুখো, ফলে বেশীক্ষন না উড়ে তাড়াতাড়ি বাসায় নেমে পড়ার জন্য অস্থির থাকে। তাই কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভাল না। ধরে নিলাম আপনার কবুতর ছোটো বেলায় ট্রেনিং এর সময় অতিরিক্ত মেমোরী থাকার জন্য হারালো না, তাতে কি, যদি পরিনত বয়েসে এসে ভাল পারফর্ম না করে। মেমোরী থাকার যে সব সুবিধা আছে, তারমধ্যে অন্যতম, খুব অল্প সময়ের মধ্যে কবুতর বাসা চিনে ফেলে, ফলে কবুতর পালকের কবুতর হারায়ে যাওয়ার টেনশন কম থাকে। এছাড়া মেঘ-বৃষ্টি-কুয়াশা অথবা বাজ পাখির দাবড় খেয়ে হারায়ে আবার ফিরে আসার সম্ভবনা বেশী থাকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, একটি কবুতরের যে ভাল মেমোরী আছে, তা বুঝবো কিভাবে? কবুতর দেখে এটা বুঝাও খুব কঠিন, তবে কিছু কিছু লক্ষন দেখে ধারনা করা যায়, তার মধ্যে অন্যতম একটি বৈশিষ্ট কবুতরগুলির মাথা কম গোল আকৃতির হয় এবং একটু বড় টাইপের মাথা হয়। ক্ষেত্র বিশেষ নাকের ফুল একটু বেশী ফোলা হয়। তাছাড়া দেখা গেছে বুনো, কালো, মাছিয়া ইত্যাদি এবং কালশীরা প্রজাতির কবুতরের একটু বেশী মেমোরী ।সোজা কথা, একটু জংলিটি টাইপের কবুতরগুলির বেশী মেমোরী হয়। আর যে গুলো আহ্লাদে টাইপের ও সৌখিন টাইপের সুন্দর দেখতে এগুলোর একটু কম মেমোরী হয়। আসলে একটি কবুতরের মেমোরী কতটা ভাল তা বের করার একমাত্র ও নির্ভরযোগ্য পন্থা হলো, কয়েক পত্তন বাচ্চা করে সেই বাচ্চা বাসা চেনানোর থেকে আরম্ভ করে শেষ পর্যন্ত পরিনত বয়স পর্যন্ত প্রাকটিক্যাল উড়ায়ে দেখে, তার পর নিশ্চিৎ হতে হয় যে ভাল মেমোরী ও ভাল দমের কবুতর, এর আগে সম্ভব না। তাছাড়া দেখা গেলো ট্রেনিং এর প্রথম দিকে খুব ভালভাবে নীচে ও মধ্য আকাশে উড়ায়ে বাসা চিনালেন, অথচ সুপার টিপে যেয়ে দিক হারা হয়ে অন্যত্র চলে গেলো ও ফিরে আসলো না। তাই আমি একটি কথা সব সময় বলি, একটি ভাল কবুতরের দীর্ঘ সময় উড়ার ক্ষমতা যেমন থাকা দরকার, তেমনি বাসায় ফিরে আসাও দরকার। তাই, একটি ভাল জাতের হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের যেমন দম থাকতে হবে, ঠিক পাশ্বাপাশি প্রয়োজনীয় মেমোরীও থাকতে হবে।প্রয়োজনীয় মেমোরী এই কথাটা এই জন্য বল্লাম আপনার কবুতরের যত বেশী মেমোরী থাকুক না কেন, মেঘের পাল্লায় পড়ে দূরে কোথাও পথ হারায়ে গেলে হয়তো বা ফিরে আসবে না। তাই শুধু মেমোরীর পিছনে ঘুরে সময় নষ্ট না করে সব দিক বিবেচনায় এনে কবুতর পালন করা শ্রেয়। এইজন্য অভিজ্ঞ ব্রিডাররা ক্রসব্রিড ও বিভিন্ন জাতের মধ্যে সেট মিলায়ে মেমোরী ও উড়ার মধ্যে মিলতাল তৈরী করে বাচ্চা তোলার চেষ্টা করেন।
হা হা হা, যেতে যেতে এবার আমার মেমোরীতে থাকা কিছু তথ্য দিয়ে আজকের মত ইতি টানতে চাই, সেটা হলো আমি অনেক আগে ইন্টারনেটের একটি রিসার্চ পেপারে পড়েছিলাম যে, রেসার হোমার কবুতর তার স্মৃতিতে ১০০০-১২০০ মত ছবি মনে রাখতে পারে এবং ঠিক তার পাশ্বাপাশি হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর মাত্র ৪০০-৪৫০ মত ছবি তার স্মৃতিতে ধারন করে রাখতে পারে। এছাড়া আমি তখন এও জেনেছিলাম, কবুতর নাকি সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি অবস্থান চিনে ও নাকের উপরে থাকা ম্যাগনেটিক ফিল্ড এর সাহায়্যে বাসা খোজার কাজে ব্যাবহার করে। বিষয়গুলি কতটা সঠিক এটা আমি ১০০% নিশ্চিৎ না, কারন ইন্টারনেটে বহু ভুল ও আজগবি তথ্য থাকে, তবে এই ধরনের জটিল তথ্য নিয়ে বেশী কাজ করেন যাঁরা রেসিং এর সাথে জড়িত।
(০৩). বাজী ওলা কবুতর ............................. চলবে ।
ধন্যবাদ।।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ০৫

“যেমন বাজি তেমন উড়া”
এক সময় খুব জোর দিয়ে বলা হতো, গিরিবাজ কবুতর মানেই বাজি থাকতে হবে এবং এটাই ধর্ম । কত ধরনের কত মানের বাজি যে আছে তার ঠিক ঠিকানা নেই, যেমন, আঞ্চলিকভাবে বিভিন্ন নামে পরিচিত কিছু বাজি, খাড়া-বাজি, চলতি-বাজি, সেলাই-বাজি, সড়কি-বাজি, ট্যায়ার-বাজি, হাত-বাজি, ম্যাঠেম-বাজি, লাথি-বাজি, বাম-বাজি, স্ক্রু-বাজি আরো যে কত ধরনের বাজি আছে তার ঠিক নেই। এইসব নাম থেকেই বুঝা যায় কবুতরটি কি ধরনের বাজি খায়? যেমন, হাত-বাজি মানে হাতের থেকে ছাড়লে বাজি খায়, ম্যাঠেম-বাজি মানে মাটিতে বাজি খায়, হা হা হা। তার মানে বুঝা যাচ্ছে আগেকার দিনে উড়ার সময়ের থেকে বাজির বিষয়টাকে বেশী প্রাধান্য দেওয়া হতো, এখন যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে এই ধারনাগুলি বিলুপ্ত হওয়ার পথে এবং মানুষ এখন শুধু জানতে চায় কত বেশী সময় উড়ে নামলো? আমি যখন প্রতিযোগীতায় উড়াই তখন যে সকল পর্যবেক্ষকরা আসেন, তাঁদের কাছে গল্পের ছলে বহুবার কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছি, ওমুক তো সেদিন ভালই উড়ালো, তা কবুতরের উড়ার ষ্টাইল আর বাজি কেমন? বাজির গুন সম্পর্কে ভাল কোনো মতামত দু-একজন বাদে তাঁদের কাছ থেকে আজও পাইনি। তার মানে কম বেশী সবাই ধীরে ধীরে বুঝতে শিখেছে, বাজিওলা কবুতর নিয়ে প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করা কঠিন একটা কাজ। তার চেয়ে বরং পাতলা বাজির কবুতর পালন করা শ্রেয়। অবশ্য এখনও অনেকেই বাজিকে বেশিক্ষন উড়ার হাতিয়ার হিসাবে ব্যাবহার করেন, তাদের ধারনা কবুতর যখন নীচের দিকে নামতে চাইবে, তখন বাজির তোড়ে আবার উপরে উঠে যাবে। তবে আমার ধারনা, এই ধরনের জাতের কবুতর দিয়ে এই ধরনের ঘটনা তৈরী করা অনেক সময় কঠিন হয়ে দাড়ায়। কেননা, দেখা গেছে, অনেক সময় বাসা-বাড়ির উচ্চতা অনেক সময় ফ্যাকটর, যেমন এই ধরনের বাজি-ওলা কবুতর নীচু ছাদে বা বামে নামতে গেলে তখনই বাজি ধরে উপরে উঠে যাবে, কিন্তু উচু দালানের ক্ষেত্রে ঐ উচ্চতায় নেমে আসা তার জন্য সহজ হয়ে যায়, ফলে উচু দালান থেকে এই জাতের কবুতর বাজির তোড়ে দীর্ঘ সময় উড়ানো অনেক সময় সম্ভব হয়ে উঠে না, তাছাড়া একবার কষ্ট করে নামা ভালভাবে রপ্ত করে ফেলতে পারলে ঐ কবুতরের কাছ থেকে এই ধরনের সুবিধা পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। আমি বরাবরি অতিরিক্ত বাজির বিপক্ষে, কেননা, আমার ধারনা প্রতিটি বাজি করতে যেয়ে কবুতর যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে দীর্ঘ সময় দম করতে সমস্যা হয়। ------------- চলবে ।
ধন্যবাদ।

ছবি ও ভিডিও


 লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ০৬

অনেকেই বোধ হয় অধৈর্য্য হয়ে যাচ্ছেন আমার পোষ্ট পড়তে যেয়ে, ইনবক্স সহ পূর্বের পোষ্টের দুই একজনের কমেন্ট পড়ে আমার সেই রকম মনে হচ্ছে। তাদের জন্য বলছি, আমি পোষ্টের ক্যাপশন “ট্রেনিং” রেখেছি এ কথা সত্য কিন্তু তার মানে এই না যে শুধু ট্রেনিং দেওয়ার বিষয় নিয়ে আলোচনা করলেই ট্রেনিং হয়ে যাবে। আপনারা নিশ্চয় এটা স্বীকার করবেন, যে সকল হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরকে ট্রেনিং দিবেন, তাদের মান যদি সেই পর্যায়ে না হয়, তাহলে আশানুরুপ ফল পাবেন না। তাই আমি চেষ্টা করছি একদম নতুন পালকদের জন্য হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের দোষগুনগুলো সহজভাবে তুলে ধরার ।
যাহোক গত পোষ্টের সুত্র ধরে জানাচ্ছি, নিজের আত্মতৃপ্তির জন্য বাজিওলা কবুতর খুব ভাল কিন্তু আপনি যখন কোনো বড় মাপের কে কতক্ষন উড়াতে পারে? এই ধরনের একটি প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করতে চাইবেন, তখন বাজিওলা কবুতর খুববেশী উপযোগী বলে আমার মনে হয় না। কেননা, এমনও দেখা গেছে আবহাওয়া খারাপ থাকায় ১-২ দিন গ্যাপ দেওয়ার কারনে প্রতিযোগীতার দিন অতিরিক্ত বাজির কারনে যেখানে সেখানে বসে পড়েছে অথবা উড়তেই পারেনি। আমাদের মাথায় রাখতে হবে প্রকৃতিতে ঝড়-বৃষ্টি, মেঘ-কুয়াশা, বাজপাখির উৎপাত থাকবেই এবং ২-১ দিন কবুতরকে না চাইলেও রেষ্ট দিতে হতে পারে, আর যদি এই ধরনের রেষ্ট দেওয়ার ফলে কবুতর অতিরিক্ত বাজির কারনে নষ্ট হয়ে যায়, তার থেকে ঝামেলার আর কি হতে পারে?
এবার আসি কোন ধরনের বাজিওলা কবুতরগুলি বেশী ঝামেলা পাকায়? আমার দেখা সব থেকে সমস্যা করে, যেগুলি খুব বেশী শব্দ করে বাজি করে, যেগুলি পা খুলে দিয়ে হেলিক্পাটারের মত দাড়ায়ে থেকে বাজি করে, যেগুলি সেলাই বাজি করে, যেগুলি বাড়ির উপর আসলেই সার্বক্ষনিক বাজি করে। তবে সেইগুলো ভাল, যেগুলো উড়ানোর সময় প্রথম ও নামার সময় বাজি করে এবং মাঝে মধ্যে বাড়ির উপর এসে পাতলা বাজি করে।
প্রত্যেকটা জিনিসের একটি সীমা রেখা আছে, যেমন, চাকরীতে Service Length বলে একটা কথা আছে, অর্থাৎ কতদিন একজন মানুষ চাকরি করতে পারবেন? তেমনি হাইফ্লাইয়ার কবুতরও কতদিন ভাল উড়বে এবং মান ধরে রাখবে তারও একটা মাত্রা আছে, সেই হিসাব করতে গেলে অতিরিক্ত বাজিওলা কবুতর এক সিজন থেকে আর এক সিজন পর্যন্ত টেনে নেওয়া অনেক কষ্টের ব্যাপার হয়ে দাড়ায়, কিন্তু পাতলা বাজির প্লেন কবুতরগুলি ২-৩ সিজন পর্যন্ত উড়ানো যায়।সাধারনত, বাজীওলা কবুতর অল্প বয়সে ভালই কসরত দেখায়, আর তাতেই আমরা অনেকে মনে করি, না জানি ১০ পাক ঝাড়ার পরে কতই না ভাল হবে। আসলে বাজির তোড়ে অল্প বয়সে সহজে নামতে পারে না এবং ক্ষেত্র বিশেষ অনেক দম করে, যেটাকে অনেকে হুতাশে উড়া বলেন এবং এই উড়াটাকে কাজে লাগিয়ে অনেকে আবার ভাল ফল বের করে আনেন, অবশ্য তার জন্য চাই অনেক বড় মাপের অভিজ্ঞতা, যা সাধারন কবুতরবাজদের জন্য পারা কঠিন।
বাজির কবুতরগুলোকে সাধারনত Roller Pigeon বলে।
(০১). Birmingham Roller
(০২). Galatz Roller
(০৩). Oriental Roller
(০৪). Parlor Roller
আমার ধারনা এদের সংশিশ্রনেই আমাদের হাতে বর্তমানে এইসব বাজিওলা কবুতর, আমরাতো মিক্সড ব্রিড ও ক্রস ব্রিড করাতে ওস্তাদ, হা হা হা।
---------------------- চলবে।
ধন্যবাদ।
** অতিরিক্ত বাজি হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের জন্য সব থেকে খারাপ একটি লক্ষন আর এটা নতুন পালকদের বুঝানোর জন্যে আমাকে ধান বানতে গীত গেতে হয়েছে। যা হোক আরো অনেক বলার ছিল কিন্তু লেখাটা অনেক বড় হয়ে যাচ্ছে বিধায় আমাকে তাড়া-হুড়া করে আগামী পর্বে বাস-স্থান ও খাবার-দাবার সম্পর্কে ছোট ছোট কিছু কথাবার্তা বলে মুল ট্রেনিং পর্বের বিষয়ে ফিরে যাবো এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যাপারে কোনো অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো না, কেননা আমি ডাক্তার নই, আমার ভুলের কারনে যদি কারো বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যায় সেটা হবে আমার জন্য বিব্রতকর।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ০৭

বাসস্থানঃ আমরা অনেকেই জানি কবুতর উষ্ণ রক্ত বিশিষ্ট প্রাণী (উষ্ণশোণিত প্রাণীও বলা হয়) , ফলে ঠান্ডা একদম সহ্য করতে পারে না। সাধারণত শীতল পরিবেশে এরা দেহাভ্যন্তরে গৃহীত খাদ্য থেকে বাড়তি তাপ উৎপাদন করে এবং এদের দেহস্থ সঞ্চিত চর্বি অথবা লোম, পালক ইত্যাদি বহিঃঅঙ্গ দেহস্থ তাপ হারাতে বাঁধা দেয়। অন্যদিকে উষ্ণ পরিবেশে এদের দেহ উপরিস্থ জলীয় উপাদান (moisture) বাষ্পীভবনের (evaporation) মাধ্যমে শরীরকে শীতল রাখে। এরা প্রচুর পরিমানে খাবার গ্রহন করে থাকে কিন্তু তার তুলনায় অতি স্বল্প খাবার বডি মাস এ রুপান্তরিত হয়। এই কথাগুলো বলার উদ্দেশ্য, আর কিছু হোক বা না হোক আপনার কবুতরকে সেই সকল খাদ্য দিতে হবে এবং বাসস্থান অবশ্যই এমনভাবে তৈরী করতে হবে, যেন, মোটেও কবুতরের অতিরিক্ত ঠান্ডা ও অতিরিক্ত গরম না লাগে।তবে হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর যথেষ্ট গরম সহ্য করতে পারে। কিন্তু, ঠান্ডা একদমই সহ্য করতে পারে না এবং এই কারনে ঠান্ডা জনিত রোগ বালাই বেশী হয়। আমাদের সবার উচিৎ এমনভাবে কবুতরের বাসা তৈরী করা যাতে শীতকালে ঠান্ডা মোটেও না লাগে, আর দেখা গেছে, ঠান্ডার থেকেই যতসব বড় বড় রোগব্যাধি হয়ে অনেকের শখের কবুতর ধ্বংশ হয়ে গেছে। এখন আপনারা আপনাদের খোপ কিভাবে তৈরী করবেন, সেটা আপনাদের বিবেচনা, তাছাড়া এখন ইন্টারনেটের যুগ আপনারা চাইলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন রকম খোপ দেখতে পারবেন ও
ইচ্ছা করলে তার থেকে বিবেচনা করে খোপ তৈরী করে নিতে পারবেন। ঠিক তেমনি গরম কালেও আপনার কবুতরের খোপ খোলামেলা ও পর্যাপ্ত বাতাস যাতায়তের ব্যাবস্থা থাকা উচিৎ, যাতে করে গুমোট পরিবেশ সৃষ্টি না হয়ে কবুতর অসুস্থ হয়ে যায়। আমার ধারনা কাঠের খোপ সবদিক থেকে আদর্শ, কেননা কাঠ তাপ-কুপরিবাহী, ফলে গরমকালে অতিরিক্ত গরম এবং শীতকালে অতিরিক্ত ঠান্ডা হবে না এবং কাঠের খোপে হটাৎ করে তাপমাত্রার তারতম্য পরিবর্তন হয় না।

খাদ্যঃ অনেকের ধারনা শুধুমাত্র ভাল ভাল খাবার খাওয়ালেই হাইফ্লাইয়ার কবুতর ভাল দম করে। এই কথাটা একেবারেই সঠিক না। তাছাড়া আবার অনেকের ধারনা, পাকিস্তান ভারতের কবুতর পালকরা যে ধরনের উচু মানের খাবার তাদের কবুতরকে দেন, সেই খাবার না খাওয়ালে কবুতর ভাল উড়ে না। হা, একথা সত্যি আবহাওয়া ও শরীরের প্রয়োজনে যে আবহাওয়ায় যে খাবার প্রয়োজন, ঠান্ডার সময় শরীর গরম রাখবে এই ধরনের খাবার, আর গরমের সময় শরীর ঠান্ডা রাখবে সেই খাবার দেওয়া উচিৎ , সেইভাবে খাওয়াতে পারলে অবশ্যই ভাল ফল পাওয়া যায়। তবে, একটা কথা আমাদের বুঝতে হবে, প্রকৃতিতে তার প্রয়োজন অনুযায়ী সব কিছু এলাকা ভিত্তিক ফলন হয়।যেমন, পাকিস্তান ভারতে যে ধরনের খাদ্য শস্য উৎপাদন হয়, তা আমাদের দেশে হয় না, আবার আমাদের দেশে যেটা সহজ লভ্য সেটা পাকিস্তান ভারতে পাওয়া যায় না। আমাদের আবহাওয়ার সাথে সামাঞ্জস্য রেখে প্রকৃতিতে সেই সকল খাদ্যশস্য ফলন হয় এবং এটা আমাদের ও আমাদের প্রানীকুলের জন্য উপযোগী।--------- চলবে।
ধন্যবাদ ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** ইতিপূর্বে হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের মান, বাসস্থান ও খাদ্য সম্পর্কে নতুন পালকদের প্রাথমিক ধারনা দিতে যেয়ে অনেক সময়ক্ষেপন হয়েছে, তার পরেও আমার ধারনা ১০% ধারনা দিতে পেরেছি কিনা, সন্দেহ। ইচ্ছা আছে, আগামী পর্বে সরাসরি ট্রেনিং এ চলে যাবো, তাই, তার আগে আমি আপনাদের কাছ থেকে এই পোষ্টের কমেন্টের মাধ্যমে জানতে চাই, আপনাদের কোন প্রশ্ন আছে কিনা? যেটা জানা থাকলে আমার ট্রেনিং সংক্রান্ত তথ্যগুলি সাজাতে সহজ হবে।

ছবি এবং ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ০৮

পূর্বের পোষ্টের অনেকের কমেন্ট থেকে দেখলাম, একটা বিষয় খুব বেশী প্রাধান্য পেয়েছে, সেটা হলো, কি ধরনের খাদ্য খাওয়ালে হাইফ্লাইয়ার কবুতর ভাল থাকবে ও ভাল পারফর্ম করবে? এবার আমার অভিজ্ঞতার কথা বলি, ব্রিডার কবুতরকে সারা বছর ভাল ভাল যত খাবার আছে, খাওয়ান, কোন সমস্যা নেই, কিন্তু যে কবুতর উড়াবেন তাকে শুধু মাত্র নির্দিষ্ট সময়ের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ানো উচিৎ, যাতে করে নির্দিষ্ট মাত্রার দৈহিক গঠন নিয়ে ট্রেনিং এ ও প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করতে পারে। তার মানে সহজ কথা এটা দাড়ালো, উড়ানো কবুতরকে সারা বৎসর ভাল ভাল খাবার না খাওয়ালেও চলবে, প্রয়োজনে আধপেটা খাবার খাওয়ায়ে রেখে দেওয়া যেতে পারে। আমি পূর্বেই বলেছি, হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরকে রেসার কবুতরের শারীরীক শক্তির সাথে তুলনা করা যাবে না, রেসার কবুতর উড়ে দৈহিক শক্তির জোরে, আর হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর উড়ে তার রক্তের গুনের কারনে। দেখেন না, বাড়ী চোখের সামনে থাকার পরেও নামে না এবং নামতে চাইলেও সহজে নামতে পারে না। লক্ষ্য করে দেখবেন, ১০-১২ ঘন্টা উড়া কবুতর যখন নেমে আসে তখন তার কি ভয়াবহ অবস্থা, সে কি ১০-১২ ঘন্টার আগে নামতে পারতো না? কিন্তু পারেনি তার রক্তের গুনের ও অতিরিক্ত দুর্বলতার কারনে। সুতো ছেড়া ঘুড়ির মত শেষের ৩-৪ ঘন্টা উড়তে থাকে। একটা ছোট উধাহরন দিলে বুঝতে পারবেন, ম্যারাথন দৌড়ে অংশগ্রহণকারী প্রতিযোগীরা এক সময় এমন অবস্থায় পড়ে, যে চাইলেও হটাৎ করে দৌড় থামায়ে দিতে পারে না তার গতির কারনে, ঠিক তেমনি আমাদের একটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার, আমাদের কবুতরের প্রাথমিক ধাপটা পার করায়ে দিতে পারলেই, বাদবাকিটা সে না চাইলেও উড়তে থাকে। তাই আমাদের সবার একটা বিষয় বেশী নজর দেওয়া দরকার, সেটা হলো, আমাদের কবুতরের যেন অতিরিক্ত স্বাস্থ্য না হয়। আরো একটি বিষয়, এরা প্রচুর পরিমানে খাবার গ্রহন করে থাকে কিন্তু তার তুলনায় অতি স্বল্প খাবার বডি মাস এ রুপান্তরিত হয়।তাই আমার যুক্তি অনর্থক বেশী ভাল মানের খাবার না খাওয়ায়ে যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকু দেওয়া উচিৎ। শুধু কিছু কিছু জিনিস খেয়াল রাখতে হবে, গরমের সময় যেন এমন খাবার না দেওয়া হয়, যাতে করে শরীর বেশী গরম হয়ে যায়, আবার শীতের সময় এমন খাবার দেওয়া উচিৎ, যাতে করে শরীর গরম থাকে। অর্থাৎ ওয়েল সীডের ( শরীষা দানা, চিনা, সূর্যমূখী ফুলের বীজ ইত্যাদি ) যোগানের পরে নির্ভর করবে শরীরের সহনীয় ব্যাপার। ওয়েল সীড কম বেশী করে দিয়ে ব্যালান্স করা দরকার . আর এছাড়া সারা বৎসর ধান, চাউল, গম, ছোলা, কালো দানা, ভুট্টা, ডাবলী ইত্যাদি প্রয়োজন মত দেওয়া যেতে পারে। তবে অতিরিক্ত গরমে ভুট্টা না দেওয়া ভাল এবং পোল্ট্রি ফিড একদম না ব্যাবহার করাই ভাল। কেননা, প্লোট্রি ফিডে আমিষ জাতীয় উপাদান মিশ্রন করা থাকে যা কবুতরের জন্য সঠিক না।যা হোক নতুনদের জন্য আমার নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি এবং আমি তাদেরকে এইভাবে জানাতে চাচ্ছি যে, আগামীতে তারা নিজেরাই এক একজন অভিজ্ঞ কবুতরবাজ হবেন এই প্রত্যাশায় এবং আমার ধারনা ওনারা আমাদের থেকে আরো বেশী অভিজ্ঞ হবেন, যেটা আমাদের সময় আমরা হতে পারিনি, কেননা, এখন ইন্টারনেটের বদৌলতে নতুনদের হাতের মুঠায় পৃথিবীর অফুরন্ত তথ্য। নতুনদের জন্য আমার
কবুতরের খাদ্য বিষয়ক ইনফরমেশন এইটাই, আপনারা আপনাদের হাতের কাছে বাংলাদেশে উৎপাদিত সহজলভ্য যা খাদ্য দানা আছে তাই আপনাদের কবুতরকে খাওয়ান, শুধু মাত্র খেয়াল রাখতে হবে আবহাওয়া যেদিন ঠান্ডা থাকবে, সেদিন ওয়েল সীডের মাত্রা বাড়ায়ে দিতে হবে এবং আবহাওয়া যেদিন অতিরিক্ত গরম থাকবে সেদিন ওয়েল সীডের মাত্রা কমায়ে দিতে হবে। মোট কথা, আমরা যেমন বৃষ্টি হলে খেচুড়ি রেধে খাই, আবার গরম পড়লে পান্থা ভাত খাই, এরকম আর কি, হা হা হা। এখানে গ্রীষ্মকাল - শীতকাল কোনো ব্যাপার না, আপনাকে প্রতিদিনই আবহাওয়ার তাপমাত্রার সাথে তাল মিলায়ে খাদ্য তালিকা তৈরী করা বুদ্ধিমানের কাজ। একবারে সারা বছরের বা মাসের খাবার তৈরী করে বস্তা ও কৌটা ভরে রাখবেন তা কিন্তু না। আলাদা আলাদা পাত্রে খাবার মজুদ থাকবে এবং প্রতিদিনই আবহাওয়ার সাখে তাল মিলিয়ে প্রয়োজন মত খাবার মিশ্রন করে খেতে দিবেন। অনেকে রুটি খাওয়ান, কেন খাওয়ান এটা আমরা অনেকেই জানি না, তবে প্রধান দুটো কারন, এক নম্বর, দ্রুত হজম হয়ে যাবে এই কারনে, আর দুই নম্বর, অনেক শস্য দানা আছে যার অরুচি ও তিক্ততার জন্য কবুতর খেতে চায় না, ফলে গুড়া করে রুটি বানায়ে খাওয়ানো হয়। দানাদার খাবার নিয়ে আমরা সব সময় চিন্তা করি, কিন্তু আমরা কি কখনও ভেবে দেখেছি? আমাদের কবুতরকে যে পানি খেতে দেই, তা কতটা স্বাস্থসম্মত? এমনওতো হতে পারে আপনার সরবরাহ করা পানিতে যথেষ্ঠ আইরোন ও আরসনিক আছে, অথবা প্রচন্ড খারীয় অথবা অম্ল? তাই বলছি এইগুলোও মাথা রাখা আমাদের জরুরী। সর্বশেষে আজকের মত একটা গুরত্বপূর্ন কথা না বল্লেই না, সেটা হলো, আপনার হাইফ্লাইয়ার কবুতরের জাতের মধ্যে যদি উড়া না থাকে, আপনি যতভাল খাবার খাওয়ান না কেন, কোন কাজ হবে না। আপনাকে শুধু খেয়াল রাখতে হবে এমন খাবার দেওয়া যাবে না, যাতে করে শরীর মোটা হয়ে যাবে, অথবা রুগ্ন হয়ে যাবে। ------------ চলবে ।।
ধন্যবাদ ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
**** ভেবেছিলাম এই পোষ্টের থেকে ট্রেনিং এর মুল পর্বে চলে যাবো, কিন্তু অনেকের খাদ্য ব্যাস্থপনা বিষয় জানার চাহিদা থাকার কারনে এবারও পারলাম না। আগামী দিন পারবো কিনা, তাও জানি না, হা হা হা। এক খাদ্য ব্যাস্থপনার উপর পোষ্ট দিতে গেলে আরো ৫ - ৬ টা পর্বে শেষ করতে পারবো কিনা সন্দেহ। সহজ কথা শুধু এইটুকু জানুন, একজন ভাল হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ পালক হতে গেলে আপনাকে অনেক গুনের মধ্যে একজন উচুমানের ডায়েটিসিয়ান / নিউট্রশনিস্ট ও হতে হবে, হা হা হা।

ছবি ও ভিডিও

ট্রেনিং পর্ব ০৯

মাথার থেকে একদম ফেলে দেন যে, শুধুমাত্র দামিদামি খাবার খেয়েই হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর ভাল পারফর্ম করে। প্রায় প্রতিটি পর্বে আমি জোর দিয়ে একটা কথা বলে এসেছি, যদি আপনার কবুতরের জাতের মধ্যে দম থাকে, তবে অবশ্যই সে উড়বে। যা হোক আবারো ফিরে যাচ্ছি খাদ্য ব্যাবস্থাপনার উপর। আমাদের একটা সহজ কথা মনে রাখতে হবে, খোপের সব কবুতরের হজমশক্তি কিন্তু সমান না, যেমনটা সব মানুষের হজম শক্তি সমান না। তাই বিবেচনা করে বয়সের ও শারীরিক যোগ্যতার উপর ভর করে প্রতি দিনের খাবার দেওয়া উচিৎ এবং হটাৎ করে বড় ধরনের পরিবর্ত করে নতুন নতুন ধরনের খাবার দেওয়া উচিৎ না। এতে হটাৎ করে হজম বিপাকীয় পদ্ধতিতে সমস্যা হবে, এমন কি ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। তাই নতুন কোনো খাদ্য দানা সংযুক্ত করতে চাইলে ধীরে ধীরে অভ্যাসে পরিনত করে দেওয়া উচিৎ। তাছাড়া ফ্লাইং লফ্টের যে কবুতর গুলির হজম শক্তি দুর্বল সেগুলোকে আলাদাভাবে নরম খোসাযুক্ত খাবার দিতে হবে এবং প্রয়োজনে আলাদা ভাবে রাখার ব্যাবস্থা করতে হবে।
কি মাপের খাওয়াবেন এবং কতটুকু খাওয়াবেন এটাও কোনো মুখ্য ব্যাপার না, আপনাকে শুধু দেখতে হবে আপনি যে খাদ্য দ্রব্য খাওয়াচ্ছেন তা, রাত্রের মধ্যে সম্পূর্ন হজম হয়ে যাচ্ছে কিনা? এবং পরের দিন সকালে ভোরে খাদ্য থলি একদম শুন্য হয়ে যাচ্ছে কিনা? আর তা শরীরীরে লাগছে কি না? “আর শরীরে লাগছে কিনা?” এটা বুঝাই একজন ভালমাপের কবুতরবাজের বড় গুন ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। আপনিও এক সময় হাতে ধরে অনুভব করতে পারবেন, কবুতরটি সুস্থ সবল আছে কিনা? এবং এই অভিজ্ঞতা অর্জন কিভাবে করতে হবে? তার কোনো ধরা বাধা ছক নেই অথবা আমি মনে করি কোনো সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিও নেই। সহজ কথা আপনাকে কিছুদিন হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর হাতে নিয়ে নড়া চড়া করলেই অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন আশা করি। এটা কোনো সৌখিন কবুতরের বডি ওজনের মত হাতে নিয়ে বুঝার উপায় নেই।হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর বডি অনেকটা হালকা হবে কিন্তু পাশাপাশ্বি হাতে নিলে যথেষ্ঠ ছটপটে ও শক্তিশালী মনে হবে। আর একটি মজার ব্যাপার হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর আগাম আবহাওয়ার পূর্বাভাস বুঝতে পারে এবং যদি ঝড়-বৃষ্টি ও ঠান্ডার প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা থাকে, তখন তারা গা ফুলায়ে খোপের মধ্যে বসে থাকে, তাই দেখে আবার অনেকে ভুল করে ট্রিটমেন্ট আরম্ভ করে দেন। তাই ট্রিটমেন্ট চালু করার আগে, এমন কিছু শরীর গরম করা খাদ্য ( শরীষা দানা ) খেতে দেওয়া উচিৎ, যা খেলে গা ফোলানো বন্ধ করে প্রানচঞ্চলতা দেখাবে।
আপনার হাতের কাছে যে খাদ্যগুলি বেশী সহজলভ্য ও আবহাওয়ার সাথে উপযোগী সেইটাই খাওয়াবেন। কোনো মানুষকে যদি সারা বৎসর ভাল ভাল খাবার খাওয়ানো হয়, সেও এক সময় অসুস্থবোধ করবে। তাই আমার মতামত, কবুতরকেও যখন প্রতিযোগীতায় ও ট্রেনিং এ উড়াবেন, তখনই শুধু এক্সট্রা যত্ন নেবেন ও খাদ্য মান বৃদ্ধি করবেন। আমাদের শুধু কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, উড়ানো কালীন সময়ে এমন কোনো খাদ্য দেওয়া যাবে না, যাতে করে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি পায়, কিন্তু যে খাদ্যে প্রচুর শক্তি আছে অথচ ওজন নিয়ন্ত্রনে থাকবে, যেমন, বাজরা, পপকর্ন, কাওন, ভাল মানের ধান ইত্যাদি। এছাড়া দানাদার খাবারের পাশ্বাপাশি পানির সাথে মাঝে মাঝে ঔষদিগুন সম্পন্ন মশল্লাও ব্যাবহার করতে পারেন, যেমন, কাঁচা হলুদের রস, আদার রস, রশুনের রস, ত্রিফলার পানি, এলাচ-দারুচিনির-লবংগের জাল দেওয়া পানি ইত্যাদি । এগুলি সবই আপনাকে ধীরে ধীরে রপ্ত করতে হবে, এব্যাপারে আমি এই মহূর্তে তেমন কোনো মতামত ও অভিজ্ঞতা প্রকাশ করবো না, কেননা, আমার এখন এই মুহুর্তে একটাই উদ্দেশ্য নতুনদের কাছে প্রমান করে দেওয়া, ভাল কবুতরের জন্য শুধু খাদ্যই তেমন মুখ্য ব্যাপার না, কারন আপনার যদি গাড়ীই ভাল না থাকে, তাতে পেট্রোলের বিকল্প অকটেনের ব্যাবহারে কিছুই যায় আসে না। তাই আমি আশা করছি আমি যখন কবুতরের মুল ট্রেনিং পর্বে চলে যাবো, তখনই অনেকেই বুঝতে পারবেন, তারা কোন মানের কবুতর নিয়ে ফাইট করতে যাচ্ছেন? কেননা, তখনই খুটি নাটি বিষয়গুলি ধরা পড়বে।
যাহোক, খাবার দেওয়ার সময়, কবুতর এ্টা যেন উপলব্ধি করতে না পারে, যে তাকে প্রতি দিন প্রতিযোগীতার মাধ্যমে হুড়ো হুড়ি করে খেতে হবে, তাহলে সে খাওয়ার লোভে না উড়ে আগে আগে নেমে আসার বদ-অভ্যাস তৈরী করবে।বিষয়টা অনেকের কাছে হাস্যকর হলেও খেয়াল করে দেখবেন। তাই অনেক সময় অনেক ভাল মানের কবুতরও এই ধরনের খাওয়ার প্রতিযোগীতায় পড়েে খারাপ হয়ে যায়।সব কিছুই মাথা রেখে চলতে হয়, আর আমি মনে প্রানে একটা কথা বিশ্বাস করি, হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর পালকরা সব সময় প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন হয় ও সহজে যে কোনো জিনিস ধারন করতে পারেন।
সাধারনত, যখন খেতে দেবেন তখন যেন খুব বেশী না খায়, তার জন্য আমাদের লক্ষ্য রাখা দরকার, তাই যখন খেতে দিবেন তখন প্রথমেই কিছু অতি ক্ষুদ্র দানাদার খাবার যেমন, কাউন, শরিসা ইত্যাদি পরিমান মত খাওয়াবেন ও পানি খেতে দিয়ে আবারও বিরাম নিয়ে কিছুক্ষন পরে বড় দানার অনান্য যেমন, ধান, চাল , গম, পপকর্ন , বাজরা ইত্যাদি খেতে দেবেন, তাতে দেখা গেছে খাদ্য থলিতে পানি থাকাতে ও অনেক সময় নিয়ে পূর্বের খাদ্য দানা খেতে যেয়ে বিরক্ত হয়ে পরের বার পরিমিত খেতে বাধ্য হচ্ছে।
শুধু এইটুকু বলে আজকের মত বিদায় নিতে চাচ্ছি, যখন, বাজরা, সূর্যমূখী ফুলের বিচি, কাওন, চিনা ইত্যাদির নামও জানতাম না, তখনও কবুতরকে ধান শরীষা খাওয়ায়ে সকাল-সন্ধা উড়াতাম, এখনও উড়াই, শুধু মাঝখানে এখন ভাল ভাল মানের খাবার খাওয়ায়ে একটু বেশী সাপোর্ট নিচ্ছি যেন আরো ভাল হয়, এই ছাড়া আর কিছুই না।
আবারও বলি হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের পারফর্ম শুধুই খাদ্য নির্ভর না, এরা জাত নির্ভর, অভ্যাস নির্ভর ও অনুকরন প্রিয়।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে পড়ার জন্য।
*** আমি আমার পরিচিত জনদের প্রায় বলি, বছরের অলস সময় গুলোতে যখন উড়াউড়ি করানো না হয়, তখন ফ্লাইং লফ্টের হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরকে এমন ভাবে মানুষ করো যেন তারা “বেঁচে থাকার জন্য খায়, খাওয়ার জন্য বেঁচে না থাকে”, এভাবেই ওদের অভ্যাস গড়ে তোলো।

ছবি এবং ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ১০

দীর্ঘ সময় কবুতর উড়ানো কোনো রকেট সাইন্স না, যে আমরা পারবো না। শুধু চাই হাতের কাছে ভাল উড়া জাতের কবুতর, আর কিছু পদ্ধতি জানা থাকতে হবে, যার মাধ্যমে সুস্থ ও ফিট কবুতরের কিছু বদ-অভ্যাস নষ্ট করে দিতে হবে এবং কিছু ভাল অভ্যাস তৈরী করে দিতে হবে, এটাই সহজ কথায় ট্রেনিং। কবুতর নিশ্চয় আপনার আমার মত ডানে যাও বায়ে যাও এগুলো বুঝে না।
গত কোন এক পর্বে আমি চেষ্টা করেছি চোখের প্রাথমিক দেখার উপর নির্ভর করে খারাপ কবুতর কেমন হবে তা মোটামুটি ধারনা করতে পারা । তাই ধারনা নির্ভর ভাল কবুতর এখন আমাদের উড়ায়ে দেখা দরকার। স্বাবাভিক ভাবে ট্রেনিং এ এখন যা কিছু পরীক্ষা নিরিক্ষা হবে তা ১০০% সঠিক হওয়া চাই এবং এখন আমাদের শুধু চোখ খোলা থাকবে কিন্তু কান একদম বন্ধ থাকবে, কারো কথা আমরা এখন আমল দেবো না। চোখের সামনে যা ঘটবে ঐটাই সঠিক।
কবুতর সংগ্রহ করার সময় যদি সম্ভব হয় প্রয়োজনে ১০ বার ভাববো আর সম্ভব হলে নিজের চোখে দেখে নেওয়ার চেষ্টা করবো অথবা খুব ঘনিষ্ট জনের কাছ থেকে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করে, তবেই কবুতর লফ্টে ঢুকানো উচিৎ।
প্রয়োজনে, অনেক সময় ড্যানা কাটা বুড়ো কবুতরের মার্কিং দেখে আমাদের সংগ্রহ করতে হয় অথবা কোনো ভাল ব্রিডারের কাছ থেকে বাচ্চা সংগ্রহ করতে হয়। তাই সে ক্ষেত্রে কবুতরের মান যাচাইয়ের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। তবে, সংগ্রহ করার সময় কবুতরের ফ্লাইং সাইকেল সম্পর্কে বিক্রেতা / দাতার কাছ থেকে আগাম কিছু ইনফর্মেশন জেনে নিলে আগাতে সুবিধা হয়। যে সব বিষয় বেশী জানার দরকার হয়, সেটা হলো (০১). কোন বয়েসে কোন পাকে কিভাবে কতক্ষন উড়বে? যা আগে উড়ানো ও দেখা আছে।(০২). যে কবুতরটিকে যখন থেকে ট্রেনিং / উড়ানো আরম্ভ করা হবে, আনুমানিক তার কত দিন পর থেকে পূর্ন দমে চলে যাবে? (০৩). এছাড়া আরো একটি বিষয জানা খুব জরুরী হয়, সেটা হলো কবুতরটি কি শুধু শীতকালে উড়ে? নাকি গরমকালে উড়ে? অথবা শীত-গরম উভয় সময় উড়ে? ইত্যাদি ।
নতুনদের কাছে এবার আরো একটি অজানা বিষয় সহজ করে তুলে ধরছি, যা ট্রেনিং এর সময় ভাল কবুতরের ক্ষেত্রে সচারাচর ঘটে, সেটা হলো, আমার দেখা অভিজ্ঞতা, যত ভাল মানের কবুতর দেখেছি, তাদের দম বাড়ার ধাপ ধীরে ধীরে বাড়তে দেখিনি। যেমন দেখা গেছে, প্রথম দিন ১০ মিনিট, দ্বিতীয় দিন আধা ঘন্টা, তার এক দিন পর দেড় ঘন্টা, তার একদিন বাদে তিন ঘন্টা, তার এক-দুই দিন বাদে ৫-৬ ঘন্টা তার ১-২ দিন বাদে ৮-৯ ঘন্টা বা সন্ধায় নামতে না পারা। মোট কথা দম বাড়ার ধাপগুলো হয় বড় বড়। আর যেগুলো ধীরে ধীরে দম বাড়ে তাদের বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে প্রতি দিন ১০-১৫ মিনিট করে ধীরে ধীরে বাড়তে বাড়তে এক সময় ৪-৫ ঘন্টা পর্যন্ত এসে থেমে যায় এবং ফিক্সড হয়ে যায়, অবশ্য মাঝে মধ্যে হটাৎ করে কারিশমা দেখায়। তার মানে বর্তমান মানডন্ডে এইসব কবুতরগুলি আমার হিসাবে মধ্যেম সারির। আমার এই অভিজ্ঞতা শতকরা ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে সঠিক হতে দেখেছি, আবার এও দেখেছি, কোনো কোনো কবুতর ১০ পাক না ঝাড়া পর্যন্ত মোটেই ভাল পারফর্ম করে না। এছাড়া এটাও প্রায় দেখি, একই মা-বাবার বাচ্চা কোনোটা অনেক ভাল আবার কোনোটা খুব খারাপ। তাই আমি সব সময় বছরে ১০% ভাল কবুতর পেলেই সন্তুষ্ট।
যাহোক, আগেই বলেছি আবারও বলছি, আমার কাছে কবুতরের ট্রেনিং এর বিষয়টি একটু অন্য রকম, ভাল জাতের কবুতর হাতের কাছে অবশ্যই থাকতে হবে, আর আমি ওদের কিছু বদ-অভ্যাস ঠিক করে ফেলানোর চেষ্টা করবো এইটুকু, আর কিছু ভাল অভ্যাস তৈরী করে দেওয়ার চেষ্টা করবো। তাই অবশ্যই ভাল উড়া জাতের হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর হতে হবে।নিশ্চয় গরু-ছাগল ট্রেনিং দিয়ে ঘোড়া বানানো যাবে না, অবশ্যই ঘোড়া লাগবে, তাহলেই তাকে রেসের জন্য উপযোগী করার চেষ্টা করা যেতে পারে।
ট্রেনিং এর জন্য সাধারনত একই জাতের কবুতর ও ফ্লাইং ষ্টাইল একই হলে ভাল হয়, তাতে যিনি ট্রেনিং দেবেন, তার জন্য কিছুটা সহজ হয় এবং দোষত্রুটি বুঝতে সুবিধা হয়। বিভিন্ন জাতের হলে একটা একটাকে অনুকরন করার জন্য অনেক সময় ভাল কবুতরও খারাপ হয়ে যায়।আগেও বহু পোষ্টে বলেছি, কবুতর প্রচন্ড অনুকরন প্রিয়।
ভাল উড়া কবুতরের কিছু গুনের মধ্যে অবশ্যই দুই একটা গুন না থাকলে বড় মাপের দম পাওয়া সম্ভব না। তার মধ্যে অন্যতম, মেমোরী, চালাক ও
সাহসিকতা ইত্যাদি। অনেকের কাছে সাহসিকতার ব্যাপারটা হাস্যকর ও অযৌক্তিক লাগতে পারে, তাদের কাছে হয়তো বা মনে হচ্ছে, কবুতর কি যুদ্ধের ময়দানে যুদ্ধ করতে যাবে? যে সাহসিকতা লাগবে? হা হা হা । --------- চলবে।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** গত পোষ্টের অনেকের কমেন্ট ও মেসেজ বক্সে খাদ্য খাবার নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই, তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, আগে না হয় আমরা চেষ্টা করি, ঐ সব দামিদামি খাবার ছাড়া কিভাবে সাধারন খাবার খাওয়ায়ে ৭-৮ ঘন্টা উড়াতে পারি, তারপর না হয় ভাল খাবার খাওয়ায়ে আরো ২-৩ ঘন্টা বাড়ায়ে নেওয়ার চেষ্টা করবো। আগেতো জানি, আমাদের লফ্টের প্রত্যেকের কবুতরের দৌড় কতদূর ?
**** “ফ্লাইং সাইকেল” এই শব্দটার বইতে আভিধানিক কোনো বাখ্যা আছে কিনা আমার জানা নেই, তবে আমি বুঝাতে চেয়েছি একটি কবুতর যখন উড়া শেখে তার থেকে সর্বচ্চো কত দিন একটানা সার্ভিস দেয়? যেমন কোন কোন কবুতর ৪-৫ বৎসর বুড়া না হওয়া পর্যন্ত ভালই উড়তে পারে ও ভালই দম করতে পারে।

ছবি এবং ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ১১

গত পর্বে উড়ানি কবুতরের কয়েকটি গুনের কথা বলেছিলাম, তার মধ্যে “সাহসিকাতা” একটি বড় গুন, কেননা, আমি লক্ষ্য করে দেখেছি, যেগুলো প্রচুর ভীতু প্রকৃতির সেইগুলো সার্বক্ষনিক ছুটে উড়ার কারনে তাদের শরীরের এনার্জি দ্রুত লস করে, ফলে দীর্ঘ সময় দম করতে পারে না। এছাড়া অতিরিক্ত ভয়ের থেকে শরীর আড়ষ্ট হয়ে ছাদের বা চালের থেকে সহজে উড়তে চায় না, যতই দাবাড়া দাবড়ি করা হোক না কেন। লাঠি দিয়ে পিটালেও উড়তে চায় না, সোজা কথায় যেটাকে আমরা আঞ্চলিক ভাষায় ঘ্যাসড়া বলি। কবুতর দীর্ঘ সময় আকাশে থেকে কত কিছুই না ফেস করতে হয় তার এয়াত্বা নেই। যে সব কারনে কবুতর ভয় পেয়ে অনেক সময় উড়তে চায় না তার মধ্যে (০১). কালো মেঘ (০২). আবাবিল পাখি / চামচিকা, (০৩). ঘন কুয়াশা (০৪). আকাশে উড়ে যাওয়া প্লেন অথবা হেলিকপ্টার (০৫). উড়ন্ত বেলুন অথবা ঘুড়ি (০৬). হটাৎ করে অপরিচিত বাহির থেকে আসা কালো/বুনো রঙের কবুতর (০৭). চিল (০৮). চরম শত্রু বাজপাখি ইত্যাদি। কবুতর যদি একটু সাহসী প্রকৃতির না হয়, তাহলে দেখা গেছে হটাৎ করে ভয় পেয়ে ড্রপ করে যায়।তাই আমি মনে করি কবুতরের মধ্যে একটু সাহসী প্রকৃতির যেগুলো সেইগুলোই এই সব বিপদ মাথায় নিয়েই দীর্ঘ সময় দম করে। তবে এখানে একটি বিষয বলা প্রয়োজন, সেটা হলো, মানুষের ক্ষেত্রে একই মা-বাবার ভাইবোনেরা যেমন সমান সাহসী হয় না, তেমনি কবুতরের ক্ষেত্রেও এমনটা দেখা গেছে।
ট্রেনিং এর জন্য যে সকল কাজ করতে হয় তার মধ্যে অন্যতম সেটা হলো ভাল জাতের সুস্থ কবুতর নির্বাচন করা এবং পোষ মানানো।
আমার কাছে ট্রেনিং এর সব থেকে কঠিন অধ্যায় মনে হয় কবুতরকে বাড়ী চেনানো। অনেকে অনেকভাবে কবুতরকে পোষ মানান। কিছুটা সহজ হয় (০-১) পাকের বাচ্চাদের পোষ মানানো, কেননা, (০-১) পাকের বাচ্চারা সহজে পোষ মানে কারন তারা চাইলেও বাসা ছেড়ে বেশী দূরে যেতে পারে না, ফলে বাসার আসে-পাশ্বে থাকতে হয়। কিন্তু (০-১) পাকের বাচ্চাদের চরম শত্রু কাক ও চিল। তাই অনেকে অল্প বয়েসি বাচ্চাদের চিল, কাকের চোখ থেকে বাচিয়ে সামান্য বাসা চেনানোর কাজ সম্পন্ন হলে আবারো বসায়ে রাখেন ৪-৫ পাক পর্যন্ত। বাসা চেনানোর সময় কবুতর যেনো বেশী দূর চলে যেতে না পারে এই জন্য অনেকে কবুতরের পাক সেফটিপিন, সুতা , টেপ দিয়ে আটকায়ে দিয়ে ড্যানার জোর কমায়ে দিয়ে ১০-১৫ দিন ছাদের উপর রেখে বাসার আসেপাশ্বে চেনানো হয়, এর পর যখন দেখা যায় বাসা চিনে ফেলেছে, তখন সেফটিপিন, সুতা, টেপ দিয়ে আটকানো থাকলে সেটা খুলে দেয়। অনেক সময় দেখা গেছে, সেফটিপিন, সুতা, টেপ ইত্যাদি খুলে দেওয়ার পরে ডানায় হটাৎ করে জোর পেয়ে যেয়ে দিক-বেদিক উড়া আরম্ভ করে, ফলে অনেক সময় হারায়ে যায়, তাই অনেক সময় গরম কালে পাকনা ভিজায়ে ছাড়া হয় ফলে পাক না শুকানো পর্যন্ত আর উড়তে পারে না এছাড়াও অনেকে ৯-১০ নম্বর পাক টেপ অথবা সুতা দিয়ে বেধে ড্যানার জোর সামান্য কমায়ে ছাড়া হয়।
অবশ্য আমি একসময় আঠালো মাটি গুলায়ে পেষ্টের মত করে পাখায় প্রলেপ দিয়ে রোদ্রে শুকায়ে ড্যানার জোর কমায়ে রাখতাম এবং বয়সের সাথে সাথে পাক ঝেড়ে অথবা গোছল করার কারনে মাটির প্রলেপ ধুয়ে পরে সব ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যেত।
বাসা চেনানোর জন্য অনেকে বাম ব্যাবহার করেন। বামের উপর কবুতর বসায়ে রেখে বাসার থেকে যতদূর কবুতর দেখতে পায় তার ব্যাবস্থা করা হয়। অনেক সময় দেখা গেছে বাম উচু হওয়াতে কবুতর বামে বসাতে অসুবিধা হয়, তাই অনেকে দুই তিনটা বিভিন্ন উচ্চতার বাম সেট করেন। আবার কেউ কেউ উন্নতমানের বিভিন্ন উচ্চতায় সেট করার জন্য লিফ্ট টাইপের বামও তৈরী করেন।
বিভিন্ন উজ্বল রঙের পতকা বাসার উপর অনেক উচ্চতায় উড়ায়ে রাখা হয়, যাতে করে কবুতর বাসা হারায়ে ফেল্লেও দূর থেকে পতাকা দেখে ফিরে আসতে পারে। অবশ্য দেখা গেছে, সব থেকে লাল রঙের পতাকা বেশী ব্যাবহার করা হয়, কেননা, অনান্য রঙ থেকে লাল রঙ অনেক দূর থেকে দেখা যায়।
------------------ চলবে।।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** আমি কথনও একটু বেশী শব্দ করে ডাকা হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ নর কবুতরকে খুব একটা ভাল পারফর্ম করতে দেখিনি।
*** আপনার উড়ানি কবুতর চোখে ঠিক মত দেখে কিনা এটা নিশ্চয় পরীক্ষা করেছেন, কিন্তু একবারও কি ভেবে দেখেছেন, আপনার কবুতর ঠিক মত কানে শোনে

 ছবি 

 লিখেছেন -
Khulna Highflyer
 

ট্রেনিং পর্ব ১২

গত পর্বের ধারাবাহিকতা রেখে আবারও বলতে হচ্ছে, কবুতরকে ভালভাবে বাসা চেনানো আসলেই সত্যি একটা কঠিন কাজ, তারপর যদি না থাকে তেমন ভাল পরিবেশ। এযাৎকাল আমার অভিজ্ঞতায় দেখা সব থেকে কার্যকারী পদ্ধতি হচ্ছে, কবুতরকে চতুরদিক নেট দিয়ে ঘেরা একটা খাঁচায় পুরে মুল খোপ থেকে কিছুটা দূরে সারাটা দিন ৭-৮ দিন রেখে দিলে কবুতর ভালভাবে বাসা চেনার কাজটা সম্পন্ন করতে পারে। নতুন পোষ মানানো কবুতরগুলি দূরের থেকে মুল খোপের অন্য কবুতরদের দেখে দেখে বাসা চেনার কাজ সম্পন্ন করে এবং বাসায় ফেরার জন্য ছটপট করে। তবে অবশ্যই যখন বিকালের দিকে ছাড়া হবে, তখন অবশ্যই যেন প্রথম দিকে পাক বাধা থাকে অথবা টেপ / সেফটিপিন দিয়ে আটকানো থাকে, না হলে হটাৎ করে উপরে ইঠে যেতে পারে এবং হারায়েও যেতে পারে। হয়তো বা ধারনার উপর নির্ভর করে বুঝা গেলো নতুন কবুতরটি ভালভাবে পোষ মেনেছে, কিন্তু গ্যারান্টি দিয়ে আমরা কেউ বলতে পারবো না, কবুতরটি মাঝ আকাশ বা তার উপরে উঠে গেলে চিনে বাড়ী ফিরে আসতে পারবে কিনা? আর বেশীরভাগ ক্ষেত্রে এখানেই কবুতরের জাতের গুনের উপর নির্ভর করবে। আমি সব সময় মনে করি কবুতর পোষ মানানোটা সব থেকে কঠিন ও কষ্টের কাজ।
এছাড়া আর একটি খুব কার্যকরী পদ্ধতি আছে, সেটা হলো, গরম কালে ঝড় বৃষ্টি না থাকলে কবুতরকে একটি খাঁচায় মুল খোপের থেকে দূরে যেখান থেকে
স্পষ্ট দেখা য়ায় এমন জায়গায় সকাল পর্যন্ত রেখে দিতে হবে, কিন্তু রাত্রে মুল খোপে ঢুকানো যাবে না। আর কবুতর মুল খোপে ফিরে আশার জন্য সন্ধার থেকে অধির আগ্রহে ছটপট করবে এবং সকালে মুল খোপে ছেড়ে দিতে হবে। এই পদ্ধতিটা খুব বেশী কার্যকরী, কেননা, আমরা দেখেছি কোন কবুতর যদি দুই একদিন হারায়ে যেয়ে রাত্রে বাইরে থেকে পরে ফিরে আসে, এই ধরনের কবুতর আর হারানো সম্ভবনা থাকে না। এই পদ্ধতিটা শীতকালে ও বর্ষার সময় করা যাবে না এবং অবশ্যই রাত্রে পেচা ও বিড়াল সহ বিভিন্ন প্রাণীর হাত থেকে খেয়াল রাখতে হবে।
যাহোক এর বাইরে যদি আর কোনো ভাল পদ্ধতি কারো জানা থাকে, তবে আশা করছি আমাদের জানাবেন, আমরাও উপকৃত হবো।
লক্ষ্য করলে দেখা গেছে, বিভিন্ন জাতের কিছু কবুতর আছে, এদের কার্যকলাপ দেখলে মনে হয় যথেষ্ঠ পোষ মেনেছে, কিন্তু যখন আকাশে উপরে উঠে তখন দিক হারায়ে আর নামতে পারে না এবং মিসিং হয়ে যায়। যে সকল কবুতর সহজে বাড়ীর থেকে দূরে যায় না, এই ধরনের জাতের কবুতর ও যে গুলি অতিরিক্ত বাজি করে, এই ধরনের কবুতর হারানো পরিমান বেশী । বিশেষ করে যে কবুতরগুলি বাড়ীর উপর তাক করে উড়ে, এই সব কবুতর সামান্য মেঘে পড়লে আর ফিরে আসতে পারে না। এরা চলমান মেঘের উপরে তাল দিয়ে উড়তে উড়তে অনেক অজানা দূরে চলে যায়, আর চাইলেও ফিরে আসার ক্ষমতা রাখে না।
-------------- চলবে ।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** কবুতর পোষ মানাতে যেয়ে আমরা অনেক সময় কবুতরকে অতিরিক্ত আদর যত্ন ও ছেনাচেটকা করি, ফলে কবুতর অনেক বেশী মানসে হয়ে যায় এবং আশানুরুপ পারফর্ম করে না। এই কারনে উড়ানি হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর যথাসম্ভব কম হাতে নিয়ে নড়াচড়া করা ভাল, তাতে ট্রেনিং এর সময়
মালিক কবুতরের সম্পর্ক দূরত্ব বেশী হওয়ার কারনে দাবাড়াদাবড়ীর ব্যাপরটা ভাল কার্যকারী হয়।

ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ১৩

১২ তম পর্বে হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের বাড়ী চেনানোর বিষয় নিয়ে চেষ্টা করেছি আমার জানা বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি তুলে ধরার। কিন্তু তার পরেও আমার নিজের কাছে মনে হয়েছে ১০০% সঠিক কোন পদ্ধতি তুলে ধরা সম্ভব হয়নি। যাহোক আরো একটি খুব বেশী ব্যাবহৃত পদ্ধতি উল্লেখ করছি, তা হলো কবুতরের মুল খোপ থেকে ধাপে ধাপে কয়েকটি নেট দিয়ে ঘেরা উচু ঘর তৈরী করে তার ভিতর কবুতর ছেড়ে রাখা হয়, ফলে কবুতর বাসা সহ আশেপাশ্বের যতদূর সম্ভব ভালভাবে দেখতে পারে ও যথেষ্ট পোষ মানে। এই পদ্ধতিটা খুব বেশী ব্যাবহার করেন পাকিস্তান, ভারত ও দুবাইয়ের কবুতর পালকরা।প্রয়োজনে আপনারা ইন্টারনেটে এই ধরনের আয়োজন করা অনেক ভিডিও দেখতে পারবেন। আর ইদানিং আমাদের দেশেও অনেকে আরম্ভ করেছেন এইভাবে কবুতর পোষ মানানোর ব্যাবস্থা।
যাহোক বাসা চেনানো আর কবুতর উড়ানো কিন্তু এক কথা না। কেন এই কথা বলছি, আমরা যখন কবুতরকে বাসা চেনাই তা শুধু মাত্র একটা পর্যায় পর্যন্ত কবুতর দেখতে পারে, কিন্তু যখন আকাশে উড়ে, তখন নিশ্চয় কবুতর একই রকম দৃশ্য দেখে না, তাই তখন আবার বাসা ঠিক মত না চেনার কারনে হারায়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে, এইজন্য আমি একটি হাইফ্লাইয়ার কবুতরকে নুন্যতম চার ধাপে বাসা চেনানোর বিষয় হিসাবে ধরি। প্রথম ধাপ বাসার ছাদ সহ আশেপাশ্বের, দ্বিতীয় ধাপ ছাদের থেকে সামান্য উপরে, তৃতীয় ধাপ মাঝ আকাশ খেকে ও চতুর্থ ধাপ টিপ ও ভ্যানিস অবস্থা থেকে। প্রথম তিনটা ধাপ কবুতরকে বাসা চেনানোর ক্ষেত্রে আমাদের হাতে কিছু করনীয় থাকে, কিন্তু চতুর্থ ধাপটি থেকে ফিরে আসবে কি আসবে না এটা একমাত্র কবুতরের নিজেস্ব জাতের গুনে ফিরে আসতে হবে। তবে প্রথম থেকে ধীরে ধীরে বাসা চেনানোর কাজে কবুতরকে সহোযোগীতা করলে আশা করা যায় কবুতর চতুর্থ ধাপ অতিক্রম করে বাড়ীতে ফিরে আসবে।
নতুন কবুতরকে বাসা চেনানোর জন্য আগের থেকে কয়েকটা পোষমানা সহোযোগী কবুতর দরকার হয়। পুরাতন আগের থেকে পোষ মানানো কবুতরের সাথে ছেড়ে দিয়ে ধীরে ধীরে বাসা সহ আসে পাশ্বের সাথে পরিচয় করায়ে দেওয়া শেষ হলে নতুনদের হালকা দাবড় দিয়ে ছাদের থেকে একটু উপরে উড়ায়ে তাড়াতাড়ি নামায়ে ফেলতে হয়। কোনো অবস্থাতে প্রথম দিকে বেশী দাবড় দেওয়া যাবে না, এতে দূরে কোথাও চলে যেতে পারে অথবা পাশ্বের উচু বিল্ডিং অথবা অনেক সময় উচু গাছে বসে পড়তে পারে এবং পরবর্তিতে সেই সব জায়গায় বসার খারাপ অভ্যাস হয়ে যেতে পারে। কবুতরকে সব সময় কঠিন ভাবে চেষ্টা করতে হবে, নিজের বিল্ডিং / চাল ছাড়া যেন আর কোথাও না বসে, তাহলে এই সব কবুতর নিয়ে ভবিসত্যে ভাল ট্রেনিং ও উড়া পাওয়া দুস্কর।
আসল কথা কবুতরকে ছক বেধে কথনও পোষ মানানো যায় না, এবং এই ভাবে লিখে লিখে নির্দিষ্ট কোন পোষ মানানোর পদ্ধতিও জানানো সম্ভব না। আপনার কবুতর আপনাকেই বুদ্ধি করে ধর্য্য ধরে পোষ মানাতে হবে। আমি যে পূর্বে প্যারায় যে ৪টি ধাপের কথা উল্লেখ করেছিলাম, তার মধ্যে প্রথম ধাপ ২টিতে একজন কবুতর পালকের বুদ্ধি করে ধর্য্য ধরে কিছু করার থাকে আর তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপে একজন কবুতর পালকের তেমন করার কিছুই থাকে না, একমাত্র ভাগ্য ছাড়া ও কবুতরের জাতের মধ্যে ভাল বাসা চেনার ক্ষমতার গুন ছাড়া।
যাহোক নতুন পালকেদের শুধু এইটুকু বলবো, কবুতর ভাল উড়াতে চাইলে ও শেষ পর্যন্ত উড়ার পারফর্ম কি দাড়ায় তা দেখতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই কষ্ট করে কবুতরকে ভাল ভাবে পোষ মানাতে হবে এবং তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপ পার করার জন্য অবশ্যই সম্পূর্ন ভাগ্যের উপর নির্ভরশীল হতে হবে।
-------------- চলবে ।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** আমাদের সময়, এই যেমন ৩০-৪০ বছর আগের ঘটনা বলছি, ঐ সময় যদি জানতাম কারোর গিরিবাজ কবুতর তার বাসায় ডিম-বাচ্চা করেছে, তাহলে কোনো অবস্থাতেই ঐ বুড়ো কবুতর বাসায় আনার কথা চিন্তাও করতাম না, কেননা, এমনও হতে দেখেছি দুই পাচ বছর পরেও ছাড়া পেলে প্রথম মালিকের বাসায় চলে যেত, কি ভায়াবহ মেমোরী ও বাড়ীর উপর টান। তাই আমরা সব সময় চেষ্টা করতাম মা-বাবার কাছ থেকে সবে নিজে ১-২ দিন খাওয়া শিখেছে এমন বাচ্চা নিয়ে পোষ মানানোর। এখন ভেবে পাইনা কোথায় গেল সেই সব জাতের কবুতর !!

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ১৪

এই পর্বে যে বিষয়টির উপর আমি বেশী গুরত্ব দিতে চাচ্ছি সেটা হলো “বাম”।অবশ্য ইচ্ছা ছিল “বাম” সহ অনান্য খুটিনাটি বিষয় নিয়ে আমার যত অভিজ্ঞতা আছে তা শেষের দিকে তুলে ধরার চেষ্টা করবো, কিন্তু মাঝ পথে অনেকেই অধির আগ্রহে প্রায় মেসেজবক্সে জানতে চাচ্ছেন, কেন বাম হাইফ্লাইয়ার কবুতরের জন্য খারাপ। কেননা, আমি কোনো এক পর্বে বলেছিলাম বাম হাইফ্লাইয়ার কবুতরের জন্য ক্ষেত্র বিশেষ খারাপ।
তার আগে একটা জরিপ আপনাদের মাধ্যমে করে নিতে চাই, সেটা হলো, এই যে খুলনাতে এত বড় বড় অনেকগুলো রেজাল্ট বিগত দিনে অনেকে করে ফেলেছেন, তাদের কয়জনার বাড়ীতে “বাম” সেট করা আছে? আমার জানা মতে একদুইজন ছাড়া কারো বাসায় “বাম” নেই। এছাড়া ভারত, পাকিস্তান ও দুবাইতে যে সকল বড় মাপের কবুতরপালক আছেন, তাদের কয়জনার ছাদে “বাম” সেট করা আছে? বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ভিডিও দেখে আমার কাছে মনে হয়েছে খুবই কম সংখ্যক পালক “বাম”ব্যাবহার করেন।
আমার ধারনা কেউ বুঝে “বাম” ব্যাবহার করেন আবার হয়তো কেউ না বুঝে “বাম” ব্যাবহার করেন। আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি “বাম” ব্যাবহারে ভাল মানের কবুতরের থেকে বড় মানের পারফর্ম বের করা কঠিন। কেন কঠিন, সে ব্যাপারে আমি একটু পরেই আমার মত করে বিশ্লেষন করবো, কারো ভাল ও মনঃপুত হলে হবে, না হলে না হবে, এটা যার যার বুদ্ধি বিবেচনার বিষয়। আমি এই নিয়ে কোনো বিতর্কে জড়াতে চাই না। শুধু এইটুকু বলবো মধ্যম সারীর সর্বচ্চো ৪-৫ ঘন্টা উড়া কবুতরের উপর এই সব সুক্ষ ব্যাপার কতটা ফলপ্রুসু জানি না, তবে এই টুক বলতে পারবো বড় মাপের উড়া কবুতরের ক্ষেত্রে অনেক কিছুই মেনেঝুনে চলতে হয়। সেটা বুঝে হোক আর না বুঝে হোক, হা হা হা, সামান্য কোনো কিছুতে ছাড় নেই।
আমরা “বাম” কেন ব্যাবহার করি? সবাই এক বাক্যে বলবেন, কবুতর যেন উচুতে বসে বাসার সব কিছু দেখে ভাল ভাবে পোষ মানতে পারে এবং রোদ পোহাতে পারে, এছাড়া আর একটি বড় বিষয় যদি কারো বাসার পাশ্বে বড় অট্টালিকা থাকে, যেন তাতে না বসে সরাসরি তার নিজের বাড়ীতে বসে।এই আর কি। এইতো গেলো “বাম” ব্যাবহারের টুকটাক কারন গুলি যা আমরা সচারচার দেখি। কিন্তু আমরা একটা বিষয় কখনও অনুধাবন করার চেষ্টা করি না, যেটা আমি পূর্বে বহুবার বলেছি, কবুতর অনুকরন প্রিয় ও অভ্যাসের দাস।এই যে অনেক সময় আমরা আমাদের কবুতরকে ছোট বেলার থেকে সারা দিন “বামে” বসায়ে রেখে বাসা চেনানো সহ রোদ পোহানোর জন্য রেখে দেই, ফলে কবুতর এইটা অবশ্যই বুঝতে সক্ষম ও অভ্যাসে পরিনত হয় যে, ঐ “বাম” নামক জায়গাটা রেষ্ট নেওয়ার জায়গা এবং ওখানে বসতে পারলে নিশ্চিন্তে দিন পার করে দেওয়া যাবে, ফলে আমার অভিজ্ঞতায় দেখেছি কবুতর সামান্য কষ্টে তাড়াতাড়ি “বামে” নেমে আসে ।
আমার সামান্য অভিজ্ঞতায় দেখেছি, কবুতরের কাছ থেকে ভাল ও উচুমানের রেজাল্ট বের করে আনতে গেলে কবুতরকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব উড়ে নেমে আসার পরে খোপে ঢুকায়ে দেওয়া উচিৎ। বিষয়টা এমন হবে উড়া এবং খোপ, এর বাইরে অন্য কিছু না। কোনো খারাপ অভ্যাস করার সুযোগ দেওয়া যাবে না। ব্যাপারটা এই রকম, খোপের বাইরে যতক্ষন থাকবে, মানে তাকে উড়তে হবে।
------------------------ চলবে।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** যদি কারো আমার এই “বাম” বিষয়ক নেগেটিভ অভিজ্ঞতা সঠিক মনে না হয়, তবে আশা করছি উনি ওনার মত করে আমাদের সাথে অভিজ্ঞতা শেয়ার করবেন, এবং আমরা আরো কিছু জানতে পারবো ।
*** “বাম” এর ছবিগুলি ইন্টারনেট থেকে উধাহরন সরুপ উপস্থাপন করা।


ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

Friday, 12 July 2019

ট্রেনিং পর্ব ১৫

“বাম” রাখা না রাখা কবুতর পালকের নিজেস্ব ব্যাপার। আমি শুধু এইটুকু জোর দিয়ে বলবো, আমি সেই সকল কবুতর পালবো না, যেটা তার ইচ্ছায় আমাকে চলতে বাধ্য করবে। মাত্র পনের বিশ হাত নামতে যার সারা দিন চলে যায় সেই সকল কবুতর আর কেউ পালন করলেও আমি অনন্ত পক্ষে পালবো না। আমি শুধু ‍এইটুকু বুঝি, যে কবুতর সহজে বামে নামতে পারে সেই কবুতর ১০-১৫ হাত নিচে ছাদে অথবা টিনের চালেও নামতে পারে। আর না পারলে, তার জন্য কবুতরকেই ট্রেনিং এর মাধ্যমে অভ্যাস করাতে হবে। অনেকের কাছে মনে হয়, বামে বসা আর নামা একটা সাধারন ব্যাপার কিন্তু আমার কাছে তা মনে হয় না। আমি মনে করি কবুতর উড়ে এসে ছাদে নামবে এবং সামান্য লাঠির ইশারায় খোপে ঢুকে যাবে এবং এইভাবেই ট্রেনিং দেওয়ার চেষ্টা করাই আসল ট্রেনিং। আর য়দি প্রতিযোগীতায় উড়ানোর ইচ্ছা না থাকে তাহলে অন্য কথা। আমি এযাবৎ যে ১৪টি পর্বে ট্রেনিং বিষয়ে অভিজ্ঞতার কথা শেয়ার করার চেষ্টা করেছি, সেগুলি ৭-৮ + ঘন্টা উড়া কবুতরের ট্রেনিং এর বিষয় মাথায় রেখে পোষ্ট দেওয়ার চেষ্টা করেছি।
কল্পনা করেন, আপনার একটা কবুতর প্রতিযোগীতায় ঘন্টা থানেক উড়ে বামে নেমে পড়লো আর তার সগোযোগী ২-৩ টা তখনও আকাশে সুন্দর অবস্থানে উড়ে বেড়াচ্ছে, আর এই উড়ে নামা কবুতরটি তখনও বাসায় নামতে পারছে না এবং কিছুক্ষন পর পর বামের থেকে খোপে নামার চেষ্টা করছে কিন্তু টেম্পারের কারনে অথবা বাজির কারনে নামতে পারছে না। এই দৃশ্য দেখার পরে কিভাবে উপরে উড়া কবুতরগুলি স্থির থাকবে? যদি একান্তই খুব ভাল মানের কবতুর না হয়, তবে উপরের গুলোও নেমে আসার সম্ভবনা খুব বেশী খাকে। তাই আমি সব সময় বলে এসেছি, উড়া যেমন একটা কবুতরের গুন, তেমনি সুন্দরভাবে বাসায় নামাও একটা গুন। এই সব চিন্তা তারাই করেন, যারা প্রতিযোগীতায় কবুতর উড়ানোর জন্য কবুতর রেডী করেন, আর যারা প্রতিযোগীতায় উড়াবেন না, তাদের কথা আলাদা। কেননা, বামে বসা না বসাতে কিছু যায় আসে না।
অনেকের কাছে হয়তো বা খুব সুন্দর সুন্দর কিছু বাখ্যা আছে, কিভাবে বামে বসা কবুতর তাড়াতাড়ি বাসার ছাদে ও খোপে ঢুকাতে হয়। কিন্তু আমার কাছে এই সব পদ্ধতি মোটেও যুক্তিযুক্ত মনে হয় না। যেমন, একটা পদ্ধতি অনেকে বলেন, বামে বসা কবুতরটি যদি নর হয় তাহলে ছাদে মায়া একটি কবুতর ছেড়ে দিলে নেমে আসবে। এই যক্তিটা আমার কাছে মোটেও গ্রহনযোগ্য মনে হয় না। কেননা, অনেকেই জানেন না, যারা প্রতিযোগীতায় কমবেশী কবুতর উড়ানোর চেষ্টা করেন, তাঁরা সাধারনত কথনই চান না প্রতিযোগীতার ট্রেনিং এর সময় মায়া ও নর কবুতর যেন একে অপরকে দেখতে পায়, তাতে করে উভয়ে আঞ্চলিক ভাষায় গরম হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে, ফলে প্রতিযোগীতায় খারাপ প্রভাব পড়ে। তাছাড়া বামে বসা কবুতর যে সব সময় পুর্নবয়স্ক হবে তার কোনো মানে নেই, অল্প বয়সি কবুতরও হতে পারে।তাছাড়া বর্তমান যে প্রতিযোগীতর হাড্ডাহাড্ডি কঠিন অবস্থা, তাতে, অনেকেই প্রতিযোগীতার জন্য ২-৩ টা কবুতর নিয়ে ট্রেনিং এর কাজ হাতে নেন না, তাঁরা নুন্যতম ১৫-২০ টা কবুতর নিয়ে আরম্ভ করেন, সে ক্ষেত্রে এই ধরনের কবুতরের মধ্যে যেগুলোর বামে নামার পরে আর সহজে ছাদে নামতে কষ্ট হয় এবং ঘন্টা দিন পার করে দেয়, সেই সকল কবুতর নিয়ে ট্রেনিং পরিচালনা করা সত্যি কষ্টের হয়ে দাড়ায়, তাই আমাদের সেই ধরনের জাতের কবুতর নিয়ে অগ্রসর হতে হবে, যে সকল কবুতর বাম ছাড়া সহজে ছাদে নামতে পারে এবং সহজে খোপে ঢুকানো যায়।
তারপর অনেকে মনে করেন, বাম না থাকলে কবুতর সহজে না নামার কারনে প্রতিযোগীতায় অনেক সময় ডিসকলি হয়, এই কথাটা না হয় আমি মেনে কিছুটা নিলাম এবং এটাও মেনে নিলাম যে কবুতরটা সন্ধায় নীচে নেমে এসেও বাম না থাকায় সহজে নামতে না পারার জন্য ডিসকলি হয়েছিল। এইবার সেই কবুতর পালককে অনুরোধ করবো, আপনি বাম লাগান এবং ডিসকলি হওয়ার মত মানের কবুতর তৈরী করেন, দেখেন আগের থেকে বাম লাগানোর পরে ডিসকলি হওয়ার মত মানের কবুতর তৈরী করা কত কষ্টের ব্যাপার এবং তখন বুঝবেন ট্রেনিং এ আপনার বাম কতটা উপকার দিয়েছিল। যেটা ডিসকলি হওয়ার জাত, সেটা বাম লাগালেও হবে আর না লাগালেও হবে।
সর্বশেষে আবারও বলবো বাম সেট করা না করা সবই একজন কবুতর পালকের নিজেস্ব ব্যাপার ও তার বাসস্থান ও অবকাঠামো ও তার কবুতরের জাতের বৈশিষ্টের উপর নির্ভরশীল। আর আমি আমার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছি, যদি কারো মনঃপুত না হয় ওনারা ওনাদের মত করে চলবেন, তাতে আমার কি বলার থাকতে পারে।
------------------------ চলবে।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** সারাটা দিন পার করে দেবে আর বামে বসে টেম্পার দেখাবে এবং কি করে আকাশ থেকে তাড়াতাড়ি নামতে হয় তাও শিখে ফেলবে, ঐ রকম কঠিন কবুতর দিয়ে ভাল পারফর্ম করা ওস্তাদি জ্ঞান সবার থাকে না, যিনি পারেন তাকে স্যালুট ।। তাছাড়া, আমি দেখেছি ফেসবুকে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন, কিন্তু কেউ প্রতিযোগীতায় উড়ানোর জন্য উপযোগী অভিজ্ঞতা সহজে শেয়ার করেন না।
*** পোষ্টের ছবিগুলি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ।।

 ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer
 

ট্রেনিং পর্ব ১৬

আমি কিন্তু আগেই বলেছি, “বাম” সেট করা এটা যার যার নিজেস্ব অবকাঠামোর উপর নির্ভরশীল। যদি একান্তই আপনার কবুতরের টেম্পারের কারনে সরাসরি বাসায় নামতে না পারে এবং পাশ্বের বড় বিল্ডিং এ বসে পড়ে সেক্ষেত্রে কিছুই করনীয় নেই। একটু ভাল করে পূর্বে পোষ্টগুলি পড়লে দেখবেন, আমি আমার কবুতরের জাত পছন্দের ক্ষেত্রেও আমার একান্ত নিজের মতামত প্রকাশ করেছিলাম। সহজ কথা যে জাতের কবুতর নামা নিয়ে বেশী সমস্যা করবে আমি সেই সকল জাত থেকেও দুরে থাকবো। ট্রেনিং এ যদি এই সব ঝামেলা মাথায় নিয়ে আগাতে হয় তাহলে সারাদিন কাজকর্ম বাদ দিয়ে কবুতর নিয়ে পড়ে থাকতে হবে। আর আমার ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা হলে, আমি যেটা করতাম, সেটা হলো, কবুতরটিকে কয়েক দিন মোটেও আর উড়াতাম না এবং চেষ্টা করতাম তার এই বদ অভ্যাস ঠিক করার, যদি না হতো তাহলে ওটাকে দিয়ে আর উড়ানোর চেষ্টা করতাম না। যেভাবে যান্ত্রিক জীবনে হাইরাইজ বিল্ডিং এ শহরে ভরে যাচ্ছে, তাতে করে আমাদের বর্তমানে টেম্পার ও অতিরিক্ত বাজিছাড়া কবুতর পালন করা ছাড়া উপায় নেই।
অবশ্য আর একটি ব্যায়বহুল পদ্ধতি আছে, যদি একান্তই বাম ছাড়া কবুতর নামানো সম্ভব না হয়, তাহলে একচ একটা বাঁশের বদলে এক ধরনের লৌহার পাইপের মধ্যে পাইপ ঢুকায়ে দিয়ে বাম তৈরী করা হয়, যেটা প্রয়োজন মত ধীরে ধীরে উচ্চতা বাড়ানো কমানো যায়, কিছুটা রেডিও এন্টিনা ও ফোল্ডিং মাছ ধরা ছিপের মত। ফলে কবুতর বামে নামার পরে, ধীরে ধীরে বামের উচ্চতা নীচের থেকে কমায়ে ফেলে ছাদের খবু কাছাকাছি আনা হয় এবং তখন কবুতর সহজে ছাদে নেমে ঘরে ঢুকতে পারে।
যা হোক বাম বিষয়ে আর কোনো আলোচনা এখানেই সমাপ্ত।
কবুতর উড়ানোর ট্রেনিং আমার কাছে সব থেকে সোজা এবং সহজ কাজ, কারন আমি মনে করি একজন কবুতর পালকের কিছুই করার থাকে না, যদি তার কবুতর ভাল ব্লাড লাইনের না হয়। আমার কাছে ট্রেনিং মানে কবুতরের কিছু খারাপ অভ্যাস যাতে না হয় এবং কিছু ভাল অভ্যাস তৈরী করায়ে দেওয়া। একজন কবুতর পালক কবুতরের জাতের কিছু খারাপ দোষ কখনই ১০০% পারবে না বদলে দিতে অথবা কোনো ভাল গুন তৈরী করতে, যদি না ব্লাড লাইনে এইসব গুন থাকে।
আমি ধরে নিচ্ছি, এ পর্যন্ত আমরা যে কয়টি পর্ব অতিক্রম করেছি, তাতে নতুন কবুতর পালকরা কিছুটা হলেও ধারনা করতে পেরেছেন, কি ধরনের হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর নিয়ে সহজে ট্রেনিং দেওয়া যাবে এবং ভাল ফল বের করে আনা সম্ভব। তবে আমাদের সবারই একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, শূধু ভাল জাতের কবুতর হলেই যে ভাল ফল পাওয়া সম্ভব তা কিন্তু না, যেমন একজন ভাল কবুতরবাজ কে খুটিনাটি সহজ কয়েকটি বিষয় অবশ্যই জানতে হবে, যেমন, যেদিন কবুতর উড়াবেন, সেই দিনটা মোটামুটি কেমন যাবে? এবং সুস্থ ও ফিট কবুতর উড়ানোর জন্য উপযোগী কিনা? তার মানে ভাল রাস্তা না হলে আপনি যতভাল গাড়ী নিয়ে রাস্তায় বের হোন না কেন, ভাল গাড়ী চালাতে পারবেন না। দিনের কখন? সকালে, দুপুরে অথবা বিকালে কখন কবুতর ট্রেনিং আরম্ভ করা হবে, সেটাও বিভিন্ন দিক মাথায় রেখে আমাদের নির্ধারন করা দরকার হয়ে পড়ে। তাছাড়া ট্রেনিং এ সহজ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হয়, যেমন, কবুতরের জাত, বয়স, আবহাওয়া, তাপমাত্রা, দিনের দৈর্ঘ্য, ফ্লাইং স্টাইল কেমন? ইত্যাদি ইত্যাদি।সর্বপরি কবুতর যদি নতুনভাবে সংগ্রহ করা থাকে, তবে অবশ্যই যার কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, তার দেওয়া গাইড লাইন অনুযায়ী মেনে ট্রেনিং দেওয়া উচিৎ, তাহলে ফল অনেক ভাল হবে এবং সমস্যা হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।
---------------- চলবে ।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** বস্তা দাবড়া দিয়ে কবুতরকে ১-২ ঘন্টা উড়ানো যায় কিন্তু যত ভাল চেহারার ও ভাল মার্কিং এর কবুতর হোক না কেন, জাতের রক্তের মধ্যে উড়া না হলে ভাল মানের উড়ানো সম্ভব না।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ১৭

ট্রেনিংটা কে নেবে, কবুতর না কবুতর পালক? হা হা হা।
আমারতো বরাবরি মনে হয় কবুতরকে ট্রেনিং দেওয়ার কিছুই নেই। কবুতরের পালককে কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হয়, যার মাধ্যমে সতর্কতার সাথে অবুঝ কবুতরকে পরিচালনা করেন মাত্র, কারন কবুতরের নিজেস্ব তেমন বুদ্ধি নেই যে নিজের থেকে করে দেখাবে। কবুতর অনুকরন ও অভ্যাসের দাস এবং জাতের রক্তের মধ্যে উড়ার ক্ষমতা যত বেশী থাকবে, সেই কবুতর ততবেশী উড়বে।
একজন ভাল কবুতর বাজকে অবশ্যই ভাল একজন আবহাওয়াবিদ হতে হয়, তাকে জানতে হয় সারাটা দিন কেমন যাবে? এবং কবুতর উড়ার জন্য কতটা উপযোগী ও নিরাপদ? তাই আমার অভিজ্ঞতায় বলে, আবহাওয়া সম্পর্কে ভাল ধারনা পাওয়ার জন্য সকালের আকাশ থেকে অথবা বিগত দুই-তিনদিনের থেকে ধারনা করা যেতে পারে।
বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগ তাই আগাম আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানা অনেকটা সহজ। এছাড়া আমাদের বাংলা পঞ্জিকা দেখেও মোটামুটি ধারনা করা সম্ভব।
ভাল কোনো আবহাওয়ার পূর্বাভাস জানার সাইটে গেলে আমরা আবহাওয়া সম্পর্কে অনেক তথ্য পাবো, এখন কথা হচ্ছে কোনটা কত মাত্রায় থাকলে একটি কবুতরের উড়ার জন্য ভাল? যেমন, Temp, RealFeel, Wind, Gust, Humidity, Dew Point, UV Index, Cloud Cover, Rain, Snow, Ice, Visibility, Ceiling, Wet Bulb ইত্যাদি ইত্যাদি। আশা করছি ট্রেনিং পর্বের একদম শেষে যতটা পারি এই বিষয়ে আমার ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা শেয়ার করার চেষ্টা করবো অথবা আপনারাও নিজেরা এই ব্যাপারে এখন থেকে জানার চেষ্টা করেন। আমারতো চাহিদা আগামীতে যথন কোনো প্রতিযোগীতায় কবুতর উড়বে, তখন যদি আয়োজক কমিটির মাধ্যমে উড়া কবুতরের আকাশে অবস্থানের ঐ সময়ের আবহাওয়ার এই সব খুটিনাটি জানা সম্ভব হয়, তাহলে ঘরে বসেই বুঝতে পারবো একটি কবুতর কতটা ফাইট করে নিজ যোগ্যতায় উড়ছে? নাকি ঘোলা মেঘে পড়ে হারায়ে দম করছে? আমার এখন এটাও মনে হয় হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর প্রতিযোগীতায় উড়ানো আর প্রচন্ড মেধা নির্ভর ক্রিকেট খেলার থেকে কোনো অংশে কম না, যদি আমরা সেইভাবে বুঝতে ও উপস্থাপন করতে পারি । আমার আশা আগামীতে বিভিন্ন প্রতিযোগীতাগুলি আরো বেশী বাস্তব বিজ্ঞানসম্মত ও প্রানবন্ত হবে।
ভাল মানের ৯-১০ ঘন্টা উড়া কবুতরকে দিনের অনেকগুলি বিপদ সামনে রেখে উড়তে হয়, তাই একজন ভাল কবুতরবাজকে দিনের সব সময়টুকু কি ঘটতে পারে তার একটি মোটামুটি ভাল ধারনা থাকা খুবই দরকার, যেটা ২-৪ ঘন্টা উড়া কবুতরের ক্ষেত্রে দরকার নাও হতে পারে। বিশেষ করে আমাদের দেশ নদী ও সাগর বেষ্ঠিত, তাই জোয়ার ভাটার উপর আবহাওয়ার তারতম্য খুব বেশী প্রভাব পড়ে।
সব সময় একজন হাইফ্লাইয়ার কবুতরবাজকে একটি জিনিস মাথায় রাখা উচিৎ যত কসরত সব আকাশে, অতএব আকাশ উপযোগী হতে হবে। অবশ্য অনেকে খারাপ আবহাওয়া ও আকাশকে কাজে লাগায়ে প্রতিযোগীতার নিয়মে ফেলে রেজাল্ট বের করে আনেন, সেখানে কবুতরের বাড়ীতে ফিরে আসার যোগ্যতাটা প্রাধান্য পায়। আমি নিজেও দুই একবার এইভাবে সুযোগ নিয়েছি।
আবার অনেকে এটাও জানেন না, অতিরিক্ত পরিচ্ছন্ন আকাশও কবুতর উড়ার জন্য ভাল না, হটাৎ করে কবুতর ড্রপ করে। কেন ড্রপ করে? এব্যাপারে পরবর্তিতে সময় সুযোগ পেলে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো।
----------- চলবে ।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য। আর কয়েকটা দিন ধর্য্য ধরেন, ভাল করে রাস্তাঘাট চিনে নেই, হা হা হা, তার পর গাড়ী যদি ভাল থাকে এবং আমি যদি সময় পাই ও সুস্থ থাকি দ্রুতগতিতে ছুটাবো, ইনসাআল্লাহ।
** অনেক সময় দেখা যায় কবুতর অসুখ ছাড়া শরীর ফুলায়ে বসে আছে, তখন ধারনা করার চেষ্টা করি, হয়তো বা সামনে বড় ধরনের ঝড় বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা থাকতে পারে।
*** আকাশের বিভিন্ন ছবি ও রুপ ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ১৮

মরা হাইফ্লাইয়ার কবুতর পালকরা লফ্ট তৈরীর ক্ষেত্রে কিছু কিছু জিনিস বুঝে করি অথবা অন্যেরটা দেখি করি। অনেক সময় আমরা নিজেরাও জানি না সুক্ষ হিসাবে কোনটা হাইফ্লাইয়ার কবুতরের জন্য ভাল, অথবা কোনটা খারাপ। আমি নিজেও অনেক ভুল করে বসে আছি। তাছাড়া আমার লফ্ট অন্যদের মত এতটা গোছালে না্, আজ খোপের এটা পছন্দ হলো তো কাল অন্যটা পছন্দ হলো। আজ এই দেয়াল টেনে দিলাম তো দুইমাস পরে মনে হলো এটা ঠিক হয়নি, তাই ভাংগো, এইভাবেই আমার ফ্লাইং লফ্ট তৈরী করেছি। এখনও আমার মনের মত বিজ্ঞান সম্মত ও সুন্দর হয়নি। আশা করি সময় সুযোগ পেলে আগামীতে করবো।
আজ এমনই একটি খুবই সুক্ষ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো, যেটা হয়তো অনেকের কাছে খুব নগন্য ব্যাপার মনে হবে, কিন্তু আমি মনে করি আসলেই ব্যাপারটা এতটা ছোট ব্যাপার না। আমরা ইদানিং লফ্টে হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর থাকার জন্য অনেকেই প্রত্যেক কবুতরের জন্য আলাদা আলাদা ষ্টান্ড দেই, যাতে করে কবুতর সাচ্ছন্দে বসে থেকে রেষ্ট নিতে পারে এবং একে অন্যকে যেন বিরক্ত না করে। আমি উড়া কবুতরের জন্য এই ধরনের সিংগেল ষ্টান্ডের পক্ষে না, আমি কবুতর বসার জন্য টানা তক্তা থাকবে আর তাতে কবুতর নিজেরা নিজেদের দখল বুঝে নিয়ে যে যার মত থাকবে। আমার কথা হচ্ছে যে জিতবে সেই সেকেন্দার, আর যে দুর্বল সে সরে দাড়াবে। অনেক কবুতরের মধ্যে তাদেরকে খুজে নিতে আমার অসুবিধা হবে না এবং ট্রেনিং সহ প্রতিযোগীতায় উড়ানোর জন্য নির্বাচন করা আমার জন্য সহজ হবে। যে ঘোড়া দাড়ায়ে ঘুমাতে পারবে না, সে আপতত মাথার থেকে বাদ। অবশ্য, অতিরিক্ত উড়ার কারনে যদি দুর্বল হয়ে থাকে, সেটা অন্য কথা।
শীতকালে এই পদ্ধতিতে কবুতর পালন করলে অনেক সুবিধা পাওয়া যায়, সেটা হলো যখন রাত হয়, তখন কবুতর কলোনি ফর্ম করে একে অন্যের সাথে শরীর মিলায়ে একজায়গায় থাকার চেষ্টা করে এবং নিজেদের শরীরের তাপমাত্রা ভাগাভাগি করে থাকার চেষ্টা করে।
এছাড়া এই পদ্ধতিতে নিজেদের মধ্যে চেনা পরিচয়টা বোধ হয় ভালই হয়, তাই মনে হয় ঝাক বেধে একত্রে উড়ার চেষ্টা করে।
------------------ চলবে ।
ধন্যবাদ ।।
*** ভারত পাকিস্তান দুবাইয়ের ওস্তাদদের কি টাকা পয়সা কম আছে? যে তাঁরা সামান্য তক্তা বিছায়ে কবুতর পালবেন? তাঁরাও তো পারতেন সিঙ্গেল ষ্টান্ড করে দিতে। আমার কথাতো বিশ্বাস হবে না, হা হা হা, প্রয়োজনে তাঁদের লফ্টের ভিডিও গুলো দেখেন। আমার ধারনা সিঙ্গেল ষ্টান্ড গুলি সৌখিন ও ব্রিডার কবুতরের জন্য ভাল ।।
মুল কথা, ভাল মানের উড়ানি কবুতর সব সময় মুভমেন্টের মধ্যে থাকবে, কোনো জড়তা কাজ করলে হবে না।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ১৯

একজন জানতে চেয়েছিলেন, আপনি এই যে হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর সম্পর্কে ট্রেনিং এর যে পোষ্ট দিচ্ছেন, এই ভাবে মেনে চললে কি তাঁর কবুতর ৯-১০ ঘন্টা উড়বে? হা হা হা, আমি তাঁকে জানিয়েছিলাম, ২ ঘন্টার কবুতর ২ ঘন্টা, ৫ ঘন্টার কবুতর ৫ ঘন্টা, আর ১০ ঘন্টার কবুতর ১০ ঘন্টাই উড়বে, এর বেশী এক মিনিটও উড়বে না, বরংচ কপাল খারাপ থাকলে কম উড়বে। তখন উনি আমাকে বল্লেন, তাহলে লাভ হলো কি? তখন তাকে আমি বুঝায়ে বল্লাম, দেখেন, আমি সব সময় বলে এসেছি, কবুতরকে ট্রেনিং দেওয়ার তেমন কিছুই নেই, আমরা শুধু পারি কবুতরের ২ টি বিষয় কাজে লাগায়ে কবুতরের কাছ থেকে যতটা সম্ভব তার জাতের মধ্যে যতটা উড়ার ক্ষমতা আছে, তা বের করে আনার, যদি জাতের মধ্যে দম না থাকে তাহলে হাজার চেষ্টা করলেও তার থেকে ভাল ফল বের করা সম্ভব না। কবুতরের ২ টি বিষয় হচ্ছে অভ্যাস ও অনুকরন করার প্রবনতা। আর আমরা এই দুইটি বিষয়কে ব্যাবহার করে কবুতরকে সর্বচ্চো ভাল পারফর্ম করানোর চেষ্টা করি। কবুতর যেন কোন খারাপ অভ্যাস না করে, যেমন গাছে বসা, পাশ্বের বাড়ীর ছাদে বসা, কবুতর দেখে যতটা সম্ভব না উড়ে নেমে আসা ইত্যাদি। আর অনুকরন বলতে, ভাল কবুতরের সাথে উড়ায়ে ভাল করার চেষ্টা আবার খারাপ কবুতরের সাথে উড়ে যেন খারাপ না হয়ে যায় সেই দিকে লক্ষ্য রাখা ইত্যাদি ইত্যাদি।
যা হোক, ট্রেনিং মানে আমি যেটা বুঝি, কিভাবে কবুতরের কাছ থেকে সর্বচ্চো পারফর্ম বের করে আনতে পারবো। তবে অবশ্যই কবুতরের জাতের মধ্যে ভাল উড়ার গুন থাকতে হবে।
কবুতর ট্রেনিং দেওয়ার আগে সব খেকে ভাল হয় কবুতরের জাতের আগের উড়ার ইতিহাস জানা, তাহলে কথন, কোন বয়সে কি কি ধরনের পারফর্ম করেছে, সেইভাবে কবুতর উড়াতে পারলে দ্রুত ফল বের করে আনা সম্ভব। যেমন কয় পাকে বাজী ঘুরবে? কয় পাকে এই পরিমান দম পাওয়া যাবে? ইত্যাদি ইত্যাদি। কবুতর ট্রেনিং এর প্রথম দিকে যদি বডি ওয়েট একটু বেশী থাকে, তাহলে মনে হয় ভাল হয়। আমার ধারনা তাতে করে কবুতর বাড়ী ছেড়ে বেশী দূরে যেতে পারে না, ফলে হারানোর সম্ভবনা কম থাকে। পরবর্তিতে ধীরে ধীরে উড়ায়ে কবুতরের বডি ওয়েট কমায়ে ফেলতে হয় এবং যেটা উড়ার জন্য সহায়ক, সেই পর্যায়ে বডি ওয়েট ধরে রাখানোর জন্য আবহাওয়ার সাথে তাল রেখে প্রয়োজনীয় সুষম খাবার দেওয়া হয়।
ট্রেনিং এর প্রাথমিক পর্যায়ে কয়টা কবুতর নিয়ে আরম্ভ করলে ভাল হয়? এ প্রশ্নটা আমাদের সবার মাথায় থাকে।
------------------- চলবে ।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য ।।
*** কয়েকদিন যাবৎ শরীর ভাল না থাকায় এখন আর আগের মত সময় বের করে লেখাটা গুছায়ে লিখতে পারছি না, দুঃখিত, তাও শত ব্যাস্ততার মধ্যে চেষ্টা করছি যতটা পারি নতুনদের জন্য লেখার। লেখার মধ্যে যদি আমার অজ্ঞতার কারনে ভুল হয়ে যায়, তাহলে আপনারা যাঁরা অভিজ্ঞ আছেন, তাঁদের কাছে অনুরোধ, তাঁরা যেন ভুল গুলো ধরায়ে দেন ও সঠিক যেটা হবে সেটা যেন তুলে ধরেন।
**** ভাল মানের কবুতর বেশী বাজপাখির দ্বারা আক্রান্ত হয়ে খোয়া যায়। আমরা বোধ হয় অনেকেই জানি না, যত ভাল উড়া হাইফ্লাইয়ার কবুতর ততবেশী খোয়া যাওয়ার সম্ভবনা। দিনের কিছু নির্দিষ্ট সময় আছে, যখন বাজপাখি খাবারের জন্য বেশী তৎপর হয়। একদম ভোর বেলা, সকাল ৭টা থেকে ৮ টার ভিতর, সকাল ১০টার থেকে ১২টা পর্যন্ত, দুপুর ৩টা খেকে ৪ টা পর্যন্ত আর সন্ধার আগে আগে। তাই একটা ভাল মানের কবুতর সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত উড়তে যেয়ে দিনের অনেক গুলি বিপদ সীমার ধাপ পার করতে হয়। কবুতর সকাল ১০ থেকে ১২ টা পর্যন্ত সব থেকে বেশী আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা থাকে, কেননা, আমার ধারনা বাজপাখি তখন বেশী ক্ষুধার্ত থাকে ও হিংস্র হয়ে যায়। উড়ন্ত কবুতরের সকালের দিকে শক্তি থাকায় ও ক্ষ্রিপ্ততার কারনে কিছুটা হলেও বেঁচে ফিরে আসতে পারে কিন্তু দিন যত বাড়তে থাকে ততবেশী দুর্বল হওযার কারনে ধরাশায়ী বেশী হয়। এই বিষয়গুলি একান্ত আমার দেখা অভিজ্ঞতা, স্থান কাল পাত্র ভেদে হয়তো বা সময় আগে পিছে হতে পারে, ফলে অন্যদের অভিজ্ঞতার সাথে ১০০% নাও মিলতে পারে।
**** ছবিগুলি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ২০

ট্রেনিং এ কতগুলি কবুতর এক সঙ্গে উড়ালে ভাল হবে? এটার কোনো ধরা বাধা নিয়ম নেই, যার কবুতর যত বেশী তিনি সেইভাবেই ট্রেনিং দিবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বেশীরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, যত বেশী কবুতর হয় ততবেশী কবুতর টিপে যাওয়ার প্রবনতা কম হয়, এবং নীচ দিয়ে উড়তে পছন্দ করে এবং বেশী কবুতর একত্রে উড়ার কারনে অতিরিক্ত বাতাসের চাপের সৃষ্টি হয়, ফলে কবুতর দ্রুত দুর্বল হয়ে অল্প উড়ে বাসায় নেমে পড়ে। তাই আমার হিসাবে হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর ৫-৬ টা সর্বচ্চো ১০-১২ টা কবুতর নিয়ে ট্রেনিং এর ব্যাবস্থা করলে ভাল হয়। এছাড়া কম কবুতর নিয়ে ট্রেনিং আরম্ভ করলে কবুতরের দোষ ত্রুটি সহজে ধরা পড়ে, ফলে সেই ভাবে পদক্ষেপ নেওয়া যায়। আমরা অনেকেই কবুতর ট্রেনিং এ উড়ায়ে দিয়ে নিশ্চিন্তে বসে থাকি এবং মাঝে মাঝে দেখার চেষ্টা করি কবুতর কি অবস্থায় আছে, কিন্তু এটা কোনো ভাল কবুতর বাজের নিরিক্ষন করার পদ্ধতি না। একজন ভাল কবুতরবাজকে ট্রেনিং এর সময় যতটা সম্ভব কবুতরের উড়া দেখা উচিৎ, তাহলেই তিনি খুব ভালভাবে কবুতরের প্রতিটা স্তরের উড়ার দোষত্রুটি দেখতে ও বুঝতে পারবেন। আর এইভাবে সার্বক্ষনিক কবুতর দেখার ফলে শরীরের উপরও আমাদের অনেক খারাপ প্রভাব পড়ে এবং যেটা অপুরোনীয় ক্ষতি, সব থেকে বড় ক্ষতির সম্মুক্ষিন হয়, সেটা হলো ঘাড়ের নার্ভের। আমি নিজেও এই ধরনের ক্ষতির সম্মুক্ষিন হয়েছি, তাই যারা এই ভাবে কবুতর দেখার জন্য বসে বসে বা দাড়ায়ে দাড়ায়ে আকাশের দিকে দীর্ঘক্ষন তাকায়ে থাকেন, তাদেরকে বলবো, আপনারা অনন্তপক্ষে ছাদে মাদুর বা খাট বিছায়ে তাতে শুয়ে কবুতর দেখার অভ্যাস করুন, নতুবা ভবিসত্যে ঘাড়ের নার্ভের বড় ধরনের ক্ষতি হবে। এছাড়াও আর একটা পদ্ধতিতে আকাশে সার্বক্ষনিক না তাকায়ে একটি গামলায় সচ্ছ পানি রেখে আকাশের প্রতিবিম্ব দেখেও কিছুটা ঘাড়ে চাপ না ফেলেও কবুতর দেখা যেতে পারে।
যাহোক, আপনার কবুতর যদি অধিক থাকে তাহলে একসাথে না ছেড়ে আগে পিছে সময় করে ছাড়লে ভাল ফল পাবেন। মনে করেন আপনার পূর্বে দ্বিতীয় ধাপ পর্যন্ত পোষ মানানো ও উড়ানো আছে এবং ১৫-২০ টা মত কবুতর তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের ট্রেনিং দিবেন। তাহলে বয়স ও উড়ার ষ্টাইল জাত দেখে ৩-৪ টা করে ছোট ছোট দলে ভাগ করুন ও এক একটি দলে ৩-৪ টা করে ছেড়ে কবুতর উড়ান। মনে করেন প্রথম দলটি ছাড়লেন এবং কবুতরটি মাঝ আকাশে উঠে গেলো এর কিছুক্ষন পর নীচ থেকে আরো একটি দল ছাড়লেন এবং এর কিছুক্ষন পর আরো একটি দল এইভাবে কবুতর আকাশে দেন। মোট কথা নীচের থেকে উৎসাহিত করা হয় উপরের গুলোকে আরো উপরে উঠার জন্য। আর আপনারা নিশ্চয় জানেন, ভাল মানের হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর নিচেয় কবুতর দেখলে টেম্পার / বাজির কারনে ফুলে ফুলে আরো উপরে উঠতে থাকে, আর এই গুনটাকে কাজে লাগায়ে আমাদের কবুতরকে ট্রেনিং এর সময় উপরে উড়ার জন্য উৎসাহ দেওয়া হয়। আর যে সকল কবুতরের জাতের মধ্যে এই ধরনের গুন নেই তাদের ক্ষেত্রে লাঠির মাথায় কাল কাপড় বেধে শব্দ করে দাবড় ও ভয় দিয়ে উড়াতে হবে।
কবুতর হাতে ধরে ছুড়ে উড়ানোর থেকে ভাল হয় যদি কবুতর উড়ানোর আগে মুল লফ্ট থেকে বের করে একটি ছোট খাঁচায় ছাদের উপর ৪-৫ মিনিট একত্রে আটকে রেখে একসাথে খাঁচার মুখ খুলে উড়ানো হয়, তাহলে দেখা যায় কবুতরগুলি আকাশে একত্রে দল বেধে উড়ার প্রবনতা বেশী থাকে। আমার ধারনা এই সংক্ষিপ্ত সময় একত্রে রাখার ফলে ওরা নিজেদের মধ্যে পরিচিত হয় যে, ওরা একই মালিকের ও একই বাসার কবুতর। এতে আরো একটি বড় সুবিধা পাওয়া যায় আপনার প্রতিবেশীর কবুতরের সাথে না উড়ে নিজেরাই দল করে উড়তে থাকে, ফলে প্রতিবেশীর কবুতরের উড়ার দোষ-গুনের প্রভাব আপনার কবুতরের উপর পড়ার সুযোগ কম থাকবে।
-------------- চলবে ।।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** ছবিটি একজনের পাঠানো মেসেজ থেকে সংগ্রহ করা। আমার ধরনা এইভাবে ছাদে সার্কেল আঁকায়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য, কবুতর যাতে অনেক উপর থেকে নিজের বাসা আলাদাভাবে চিনতে পারে এবং আমার আরো একটি ধারনা, ছাদে এইভাবে সার্কেল আঁকায়ে দেওয়ার কারনে হয়তোবা বাজপাখির উৎপাত কম হবে, কেননা ছবির এই সার্কেল গুলি উপর থেকে eagle eye এর মত ভীতির সঞ্চার করতে পারে। কেননা, যেখানে ঈগল পাখির উপস্থিতি থাকবে ঐ এলাকায় বাজ পাখি খুব একটা থাকে না ভয়ের কারনে। ফলে কবুতর ভয় পেয়ে জীবনমরন এক করে যতটা সম্ভব উড়বে এবং বাজপাখির উৎপাত ও থাকবে না। তাই হয়তোবা আঁকানো সার্কেল থেকে বাজপাখির উৎপাত এড়ানো ও কবুতর বেশী উড়া ও বাসা ভালভাবে চেনা এই তিনটি প্রধান উপকার পাওয়ার জন্য এটা কোনো নতুন উদ্ভাবন।
*** এই যে ভারত পাকিস্তান দুবাইতে ওঁনারা কবুতর উড়ানোর জন্য যেভাবে সাজায়ে গুছায়ে আয়োজন করে বিজ্ঞান সম্মত ভাবে উড়ান তাতে করে একটি কবুতরের সর্বচ্চো পারফর্মনেস বের করা অনেক সহজ। এটাই, ট্রেনিং বলেন আর যাই বলেন।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ২১

আজ সকালের ট্রেনিং ( পর্ব - 20 ) পোষ্টের পরে অনেকের ইনবক্সে কৌতুহলী প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য Eagle Eye কি এবং কি কাজে ব্যাবহার হয় তা জানানোর জন্য এখানে এড্রেস দেওয়া হলো, আপনারা চাইলে এ বিষয়ে আরো ভালভাবে জেনে নিতে পারবেন।
https://birdbarrier.com/eagle-eye-system.html
আমি আমার মত করে ইন্টারনেট থেকে যতটুকু Eagle Eye ডিভাইস সম্পর্কে বুঝেছি, তা তুলে ধরার চেষ্টা করা হলো। Eagle Eye একটি ডিভাইস, যা বড় বড় বিল্ডিং এর ছাদে সেট করে দেওয়া হয়। Eagle Eye বিদ্যুৎ এর মাধ্যমে চলে। এই ম্যাশিনটার উপরে একটি চাকতির মত থাকে এবং তা কালো, হলুদ ও সাদা ইত্যাদি রঙের মোটা দাগ আঁকানো থাকে, যা চালু করে দেওয়ার পরে দূর থেকে মনে হবে ঈগল পাখির চোখ, ফলে পাখির রাজা ঈগল পাখির কৃত্তিম উপস্থিতি টের পেয়ে অনেক ছোটখাটো পাখি, কবুতর, কাক ও বাজপাখিও কাছাকাছি ভয়ে আসতে চাইবে না, এটাই Eagle Eye ডিভাইসের বৈশিষ্ট। বাহিরের দেশে বড় বড় হোটেল, কার পাকিং ও জাহাজে এই ডিভাইস লাগানো থাকে, ফলে কোনো কাক, কবুতর, সিগার্ল পাখি ঐ সকল জায়গায় ভয়ে বসতে চায় না। তাই এই পাখির বিষ্ঠা সহ উৎপাত এড়ানোর কাজে Eagle Eye ব্যাবহার করা হয়।
এতদিন আমাদের চিন্তা করতে হতো কেউ প্রতারনার আশ্রয় ( ডপিং ) নিয়ে বেশী সময় হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর উড়াচ্ছে কিনা? এখন আবার নতুন দুঃচিন্তা আমাদের মাথায় ঢুকে গেলে, কেউ আবার গোপনে ছাদে প্রতিযোগীতার দিন ডিভাইস ব্যাবহার করছে নাতো? তাহলে এটা হবে অনেক দুঃখের ও লজ্জার ব্যাপার।
-------- চলবে ।
ধন্যবাদ ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** এই পোষ্টটি শুধুমাত্র Eagle Eye ডিভাইসটি সম্পর্কে অনেকের কৌতুহল মেটানোর জন্য দেওয়া হলো, এটার সাথে মূল ট্রেনিং এর কোনো সম্পর্ক নেই, শুধু জানার জন্য জানা।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer


ট্রেনিং পর্ব ২২

২০-২১ পর্বে কবুতর ছাড়ার সংখ্যা এবং কিভাবে ছাড়তে হবে তার প্রাথমিক ধারনা নিয়ে ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছিলাম। আসলে আগেও বলেছি হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর ট্রেনিং দেওয়ার উপর লিখে লিখে কোনো পোষ্ট করা সত্যিই খুব দূরহ ব্যাপার। কেননা একজন কবুতর বাজ ট্রেনিং দেওয়ার সময় কি কি সমস্যায় পড়বেন তা আগের থেকে বুঝা এবং বলা সম্ভব হয়ে উঠে না। যেমন, আপনি প্রতিদিন একই রঙের ও একই জাতের কবুতর উড়ান, দেখা গেলো হটাৎ আপনি একটি নতুন জাতের নতুন আনকমন রঙের কবুতর উড়ালেন অথবা আপনার নিকট প্রতিবেশী উড়ালেন, আর তাই দেখে ভয় পেয়ে আপনার নতুন পোষ মানানো বাচ্চারা দিকবেদিক ছুটাছুটি করে কয়েকটা হারায়ে গেলো। তাই আমি অনেক আগের পর্বে বলেছিলাম কবুতরের জাতের মধ্যে সাহসও থাকতে হবে। তাছাড়া এই ধরনের উল্টাপাল্টা সমস্যা এড়ানোর জন্য বিভিন্ন রঙের কবুতর ছোট বেলার থেকে একত্রে রেখে ভয় কমানো যেতে পারে। কিন্তু আমি এর আগেে এটাও বলে এসেছি, একই জাতের ও উড়ার ধরন এক হলে কবুতর ট্রেনিং দিতে সুবিধা ও ভাল ফল পাওয়া যায়, তাই একজাত হোক, তাই এই ধরনের ছোটখাটো সমস্যা এড়ানোর জন্য কবুতরকে বিভিন্ন কৃত্তিম রঙ করা যেতে পারে। আর বিভিন্ন রঙের কবুতর হলে বাজপাখিকে কিছুটা বিব্রতকর করে ফেলে, ফলে নির্দিষ্ট টার্গেট করতে অসুবিধার সম্মুক্ষিন হয়।
যাহোক, উড়ানোর জন্য অনেক কবুতর থাকলে ছোট ছোট দল করে ও আগে পিছে সময় করে কবুতর উড়ানো ভাল, তাতে করে সহজে কবুতরের দোষগুন নির্দিষ্ট করা যায়। আমাদেরকে অবশ্যই বুঝার চেষ্টা করতে হবে, দলের কোন কোন কবুতরটির কারনে অন্যরা পিছায়ে পড়ছে? কারন কবুতর ট্রেনিং এর প্রাথমিক পর্যায়ে প্রচন্ড অনুকরন প্রিয়। যখন বয়স হয়ে যায়. তখন নিজের জাতের রক্তের দোষগুন প্রকাশ পায়, তখন আর অনুকরনের বিষয়টা গুরুত্ব পায় না। যেমন, যে জাতের মধ্যে অতিরিক্ত বাজী আছে, তাকে চাইলেও সহজে বাজী কমায়ে উড়ানো সম্ভব হবে না। আবার যে জাতের মধ্যে দীর্ঘ সময় ড্যানা মেলে চিলের মত উড়ার অভ্যাস আছে, তা না চাইলেও ঐভাবে উড়বে। অনেকের কাছে এই ড্যানা মেলে উড়ার ব্যাপারটা খারাপ দৃষ্টিতে দেখা হয়, কিন্তু আমি দেখেছি এই ধরনের কবুতর আবার দীর্ঘ সময় উড়ার ক্ষমতা রাখে, আমার ধারনা এই পদ্ধতিতে কবুতর পাখার রেষ্ট নিয়ে আবার নতুন উদ্যমে উড়ে।
কবুতর ট্রেনিং এর প্রাথমীক পর্যায়ে দলে অল্প উড়া ১-২ টা পুরানো বুড়ো কবুতর হলে বাচ্চাদের ট্রেনিং দিতে সুবিধা হয়। কারন হিসাবে দেখা গেছে নতুন ট্রেনিং দেওয়া বাচ্চারা ওদের অনুসরন করে উড়ে ও অনুকরন করার চেষ্টা করে। তবে অবশ্যই একটা জিনিস মাথায় রাখতে হবে, যেন বুড়ো কবুতরগুলির
উড়ার মধ্যে যেন খারাপ কিছু লক্ষন না থাকে, যেমন, বাজী খেয়ে ফিনিসিং না দিয়ে হাফ মাজা ভাংগা, তারপর অতিরিক্ত ড্যানা পিটানো ইত্যাদি ইত্যাদি, তাহলে নতুনরাও অনুকরন করে এই সব খারাপ অভ্যাস গড়ে তুলবে।অনেকে এই ধরনের বুড়ো কবুতরগুলোকে ট্রেনার হিসাবেও আখ্যা দিয়ে থাকেন, হা হা হা।
---------------- চলবে ।
ধর্য্য ধরে সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
*** ফেসবুকে অনেককে দেখি আনাড়ীভাবে কবুতর ধরতে, আগে ভালভাবে কবুতর ধরা শেখেন। মনে রাখবেন উড়ানোর আগে আপনার আনাড়ী হাতে ধরার কারনে আপনার কবুতর খারাপ পারফর্ম করতে পারে।
*** ছবিগুলি ইন্টারনেট থেকে সংগ্রহ।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

ট্রেনিং পর্ব ২৩

গত পর্বে বলেছিলাম, যদি কবুতরের সংখ্যা বেশী থাকে তাহলে ছোট ছোট দল করে, সময় আগে পিছে করে উড়লে প্রত্যেকটা কবুতর মনিটরিং করতে সুবিধা হয়, ফলে কোন কোন কবুতরের জন্য দলের অন্য কবুতর খারাপ হচ্ছে সেটা বের করা সহজ হয়। একটা বিষয় আমি লক্ষ্য করেছি, যেমন ৫-৬ ঘন্টা উড়া কবুতরের সাথে ১-২ ঘন্টা কবুতর সেট মিলায়ে উড়ালে যতটা না সমস্যা হয়, তার থেকে ৫-৬ ঘন্টা উড়া কবুতরের সাথে ২-৩ ঘন্টা উড়া কবুতর দিলে ৫-৬ ঘন্টা উড়া কবুতরগুলো খারাপ পারফর্ম করে। আমার ধারনা বেশী সময় একসাথে উড়ার কারনে ওদের নিজেদের মধ্যে যথেষ্ট তাল তৈরী হয়ে যায়, ফলে খারাপ গুলোর কারনে ভালগুলোও খারাপ হয়ে যায়। তাই আমার অভিজ্ঞতায় পেয়েছি, যদি খারাপ ভাল একসাথে উড়াতে হয় তাহলে ওদের পারফর্ম করার ক্ষমতার দূরত্ব যেন একটু বেশী থাকে। মোটামুটি সব কথাতো লিখে লিখে বুঝানোও কঠিন, এটা যার যার কবুতর উড়ানোর নিজেস্ব ধারার উপর নির্ভরশীল।
অল্প কবুতর ট্রেনিং দিলে বাজপাখির হাত থেকে বাঁচার সংখ্যা ও হারানোর সংখ্যাও তুলনামূলক কম থাকে। যেমন দেখা গেলো, আপনি ১৫-২০ টা কবুতর একসাথে ট্রেনিং এ দিলেন, মানে আপনি বাজ পাখিকে বেশী করে আমন্ত্রন জানালেন। এতগুলো কবুতর দেখলে বাজপাখি স্বাভাবিকভাবে আপনার কবুতরের উপর বেশী টার্গেট করবে। দেখা গেলো বেশী কবুতরের মধ্যে আক্রমন করলো, ধরে নিলাম, ধরলোও একটা, বাকিগুলি ভয়ে দিকবিদিক ছুটাছুটি করলো এবং হারানোর সংখ্যা বেশী হলো, তেমনি মেঘে পড়ে হারায়ে যাওয়ার সংখ্যাও বেশী হওয়ার সম্ভবনা থাকে। তাই আমার মতামত, প্রয়োজন মত কম কম করে কবুতর ট্রেনিং দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। তাছাড়া যদি আপনি প্রতিযোগীতায় কবুতর উড়াতে চান, সেখানেও বড়জোর ৫-৭ টা কবুতর এক সাথে উড়াতে পারবেন, তাই অহেতুক বেশী কবুতর ট্রেনিং এ দিয়ে নষ্ট করার কোনো মানে হয় না।
আমি সাধারনত, অল্প সংখ্যক কবুতর ট্রেনিং দিয়ে যেটা যেটা ভাল হয় সেইগুলোকে আলাদা করে রেখে পরে চুড়ান্ত প্রতিযোগীতায় উড়ানোর আগে ২-৩ দিন ভাল গুলোকে একসাথে সেট মিলায়ে ট্রেনিং দিয়ে কনফর্ম হয়ে প্রতিযোগীতায় উড়ায়ে দেই। অবশ্য অনেকেই সরাসরি অনেকগুলি কবুতর ট্রেনিংএ পাঠান আর তার থেকে যেগুলো ভাল হয় সেইগুলির থেকে কমায়ে ভাল গুলো প্রতিযোগীতায় উড়ায়ে দেন।
---------- চলবে ।।
ধর্য্য ধরে সংগে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
*** দুঃখিত, তিন চার দিন যাবৎ প্রচন্ড মাথাবাথা ও শরীর খারাপ থাকায় বোধ হয় পূর্বের লেখার সাথে ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া পূর্বের পোষ্টের পরে অনেক দেরীতে পোষ্ট হওয়াতে আমি নিজেও অনেকটা তাল হারায়ে ফেলেছি।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

Thursday, 11 July 2019

ট্রেনিং পর্ব ২৪

ট্রেনিংএ আমাদের অনেকেরই কবুতর উড়ায়ে দিয়ে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সময়ের অভাবে দেখা সম্ভব হয়ে ওঠে না, অথবা দেখি না, ফলে আমরা ভালভাবে জানতেই পারি না, আমাদের কবুতর কেন ভাল উড়লো? অথবা খারাপ উড়লো। তাই অনেকেই তার নিজের কবুতর নিয়ে দ্বিধাদন্দে ভোগেন, আমরা সাধারনত বেশীরভাগ ক্ষেত্রে অন্যের কথার উপর বিশ্বাস করে কবুতর সংগ্রহ ও পালন করি, ফলে অনেক সময় রেজাল্ট জানা সঠিক হয় না এবং হতাশায় ভুগি। সেক্ষেত্রে নতুনদের প্রতি আমার জানানো, আপনারা আর যাই করেন, হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর নিজের বাসায় নিজে উড়ায়ে তারপর পছন্দ হলে জাত বৃদ্ধি করবেন , না হলে পরবর্তিতে সমস্যায় পড়বেন। কারন একজনের বাসায় ভাল উড়লো মানে এই না যে, আপনার বাসায় আপনার কাছে ভাল উড়বে। সব কিছু নির্ভর করে ছোট ছোট ভুলভ্রান্তি অতিক্রম করে ভাল রেজাল্ট বের করে আনা, তবে এটাও সত্য, কবুতরের জাতের মধ্যে যদি দীর্ঘ সময় উড়া থাকে তবে অবশ্যই একদিন না একদিন আপনাকে উড়া দেখাবেই, ইনসাআল্লাহ।
যা হোক, আমি আজ যে বিষয়টির উপর আমার ছোটখাটো অভিজ্ঞতা শেয়ার করবো, সেটা হয়তোবা অনেকের মতের সাথে মিল নাও থাকতে পারে, অথবা আমি হয়তো আমার চিন্তাধারা সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারবো না। আমি দেখেছি, যে কবুতর ছোটো বয়সে দ্রুত তৈরী হয়, মানে হটাৎ করে অধিক সময় দম করে, সেই কবুতর দ্রুত তার পারফর্ম নষ্ট করে ফেলে। অনেকেই কবুতরের এই অল্প বয়েসে অধিক উড়াটাকে অনেক বড় মাপের গুন হিসাবে দেখেন ও তারা মনে করেন, মাত্র (১-২) পাকে এই পরিমান উড়েছে, না জানি পুর্নবয়স্ক হলে কতই না উড়বে? বাস্তবিক বেশীরভাগ ক্ষেত্রে তা ঘটে না। আমার ধারনা, আমরা ঐ বাচ্চা কবুতরটিকে প্রায় প্রত্যেকদিন দিন উড়ায়ে নষ্ট করে ফেলি এবং এক সময় এসে দেখা যায় ধীরে ধীরে দম কমে আসে। এব্যাপারে অবশ্য আমার একান্ত নিজের একটি ধারনা কাজ করে, সেটা হলো, অতিরিক্ত উড়ানোর কারনে, বাচ্চা কবুতরের অপরিপক্ক হাড়ের জয়েন্টের যে মর্জ্জা আছে, তা দ্রুত শুকায়ে যায়, ফলে দিন দিন খারাপ হয়ে যায়। তাই আজ আমি অভিজ্ঞদের কাছে সবিনয় জানতে চাইবো, এই অতিরিক্ত উড়া ও হাড় মজ্জার আমার নিজেস্ব ধারনার বিষয়টি সঠিক কিনা?, তাছাড়া এটাও জানার আগ্রহ থাকবে, কি ধরনের খাদ্য খাবার খাওয়ালে এই ধরনের মর্জ্জা সঠিক রাখায় সাহায্য করবে?
আমি ক্ষেত্র বিশেষ এ্যাপেল সিডার ভ্যানিগার পানির সাথে উড়ানি কবুতরকে খাওয়ায়ে দেখেছি, কবুতর অনেক সুস্থ থাকে ও প্রথম দিকে খাওয়ানোর ফলে উড়ানোর সময় অনেক ভাল পারফর্ম করে, কিন্তু পাশ্বাপাশি এটাও দেখেছি, উড়া কবুতর দিন দিন পারফর্ম খারাপ করেছে। তার পরে বিভিন্ন সুত্র থেকে এ্যাপেল সিডার ভ্যানিগার সম্পর্কে যা জেনেছি, তা হলো এ্যাপেল সিডার ভ্যানিগার নাকি হাড় নমনীয় করে এবং মজ্জা শুকায়ে ফেলে?
-------- চলবে ।
ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
*** আমার কাছে ট্রেনিং মানে ধীরে ধীরে আমাদের ছোট ছোট ভুলগুলো সুধরে ভাল কিছু করার চেষ্টা।



ছবি ও ভিডিও

 লিখেছেন -
Khulna Highflyer

কবুতরের হোমমেড হ্যান্ডফিডিং ফর্মুলা

বরাবরের মতো এইবারও বাচ্চাগুলাকে ওদের বাবা-মা খাবার খাওয়ায়...কিন্তু তারপরেও, আমি প্রতিদিনই ওদের একবার করে হ্যান্ডফিডিং করাই ওদের সুস্বাস্থ...