কল্পনা করেন, আপনার একটা কবুতর প্রতিযোগীতায় ঘন্টা থানেক উড়ে বামে নেমে পড়লো আর তার সগোযোগী ২-৩ টা তখনও আকাশে সুন্দর অবস্থানে উড়ে বেড়াচ্ছে, আর এই উড়ে নামা কবুতরটি তখনও বাসায় নামতে পারছে না এবং কিছুক্ষন পর পর বামের থেকে খোপে নামার চেষ্টা করছে কিন্তু টেম্পারের কারনে অথবা বাজির কারনে নামতে পারছে না। এই দৃশ্য দেখার পরে কিভাবে উপরে উড়া কবুতরগুলি স্থির থাকবে? যদি একান্তই খুব ভাল মানের কবতুর না হয়, তবে উপরের গুলোও নেমে আসার সম্ভবনা খুব বেশী খাকে। তাই আমি সব সময় বলে এসেছি, উড়া যেমন একটা কবুতরের গুন, তেমনি সুন্দরভাবে বাসায় নামাও একটা গুন। এই সব চিন্তা তারাই করেন, যারা প্রতিযোগীতায় কবুতর উড়ানোর জন্য কবুতর রেডী করেন, আর যারা প্রতিযোগীতায় উড়াবেন না, তাদের কথা আলাদা। কেননা, বামে বসা না বসাতে কিছু যায় আসে না।
অনেকের কাছে হয়তো বা খুব সুন্দর সুন্দর কিছু বাখ্যা আছে, কিভাবে বামে বসা কবুতর তাড়াতাড়ি বাসার ছাদে ও খোপে ঢুকাতে হয়। কিন্তু আমার কাছে এই সব পদ্ধতি মোটেও যুক্তিযুক্ত মনে হয় না। যেমন, একটা পদ্ধতি অনেকে বলেন, বামে বসা কবুতরটি যদি নর হয় তাহলে ছাদে মায়া একটি কবুতর ছেড়ে দিলে নেমে আসবে। এই যক্তিটা আমার কাছে মোটেও গ্রহনযোগ্য মনে হয় না। কেননা, অনেকেই জানেন না, যারা প্রতিযোগীতায় কমবেশী কবুতর উড়ানোর চেষ্টা করেন, তাঁরা সাধারনত কথনই চান না প্রতিযোগীতার ট্রেনিং এর সময় মায়া ও নর কবুতর যেন একে অপরকে দেখতে পায়, তাতে করে উভয়ে আঞ্চলিক ভাষায় গরম হয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকে, ফলে প্রতিযোগীতায় খারাপ প্রভাব পড়ে। তাছাড়া বামে বসা কবুতর যে সব সময় পুর্নবয়স্ক হবে তার কোনো মানে নেই, অল্প বয়সি কবুতরও হতে পারে।তাছাড়া বর্তমান যে প্রতিযোগীতর হাড্ডাহাড্ডি কঠিন অবস্থা, তাতে, অনেকেই প্রতিযোগীতার জন্য ২-৩ টা কবুতর নিয়ে ট্রেনিং এর কাজ হাতে নেন না, তাঁরা নুন্যতম ১৫-২০ টা কবুতর নিয়ে আরম্ভ করেন, সে ক্ষেত্রে এই ধরনের কবুতরের মধ্যে যেগুলোর বামে নামার পরে আর সহজে ছাদে নামতে কষ্ট হয় এবং ঘন্টা দিন পার করে দেয়, সেই সকল কবুতর নিয়ে ট্রেনিং পরিচালনা করা সত্যি কষ্টের হয়ে দাড়ায়, তাই আমাদের সেই ধরনের জাতের কবুতর নিয়ে অগ্রসর হতে হবে, যে সকল কবুতর বাম ছাড়া সহজে ছাদে নামতে পারে এবং সহজে খোপে ঢুকানো যায়।
তারপর অনেকে মনে করেন, বাম না থাকলে কবুতর সহজে না নামার কারনে প্রতিযোগীতায় অনেক সময় ডিসকলি হয়, এই কথাটা না হয় আমি মেনে কিছুটা নিলাম এবং এটাও মেনে নিলাম যে কবুতরটা সন্ধায় নীচে নেমে এসেও বাম না থাকায় সহজে নামতে না পারার জন্য ডিসকলি হয়েছিল। এইবার সেই কবুতর পালককে অনুরোধ করবো, আপনি বাম লাগান এবং ডিসকলি হওয়ার মত মানের কবুতর তৈরী করেন, দেখেন আগের থেকে বাম লাগানোর পরে ডিসকলি হওয়ার মত মানের কবুতর তৈরী করা কত কষ্টের ব্যাপার এবং তখন বুঝবেন ট্রেনিং এ আপনার বাম কতটা উপকার দিয়েছিল। যেটা ডিসকলি হওয়ার জাত, সেটা বাম লাগালেও হবে আর না লাগালেও হবে।
সর্বশেষে আবারও বলবো বাম সেট করা না করা সবই একজন কবুতর পালকের নিজেস্ব ব্যাপার ও তার বাসস্থান ও অবকাঠামো ও তার কবুতরের জাতের বৈশিষ্টের উপর নির্ভরশীল। আর আমি আমার অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছি, যদি কারো মনঃপুত না হয় ওনারা ওনাদের মত করে চলবেন, তাতে আমার কি বলার থাকতে পারে।
------------------------ চলবে।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** সারাটা দিন পার করে দেবে আর বামে বসে টেম্পার দেখাবে এবং কি করে আকাশ থেকে তাড়াতাড়ি নামতে হয় তাও শিখে ফেলবে, ঐ রকম কঠিন কবুতর দিয়ে ভাল পারফর্ম করা ওস্তাদি জ্ঞান সবার থাকে না, যিনি পারেন তাকে স্যালুট ।। তাছাড়া, আমি দেখেছি ফেসবুকে অনেকেই বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন, কিন্তু কেউ প্রতিযোগীতায় উড়ানোর জন্য উপযোগী অভিজ্ঞতা সহজে শেয়ার করেন না।
*** পোষ্টের ছবিগুলি ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত ।।
ছবি ও ভিডিও
লিখেছেন -
No comments:
Post a Comment