Friday, 12 July 2019

ট্রেনিং পর্ব ১৬

আমি কিন্তু আগেই বলেছি, “বাম” সেট করা এটা যার যার নিজেস্ব অবকাঠামোর উপর নির্ভরশীল। যদি একান্তই আপনার কবুতরের টেম্পারের কারনে সরাসরি বাসায় নামতে না পারে এবং পাশ্বের বড় বিল্ডিং এ বসে পড়ে সেক্ষেত্রে কিছুই করনীয় নেই। একটু ভাল করে পূর্বে পোষ্টগুলি পড়লে দেখবেন, আমি আমার কবুতরের জাত পছন্দের ক্ষেত্রেও আমার একান্ত নিজের মতামত প্রকাশ করেছিলাম। সহজ কথা যে জাতের কবুতর নামা নিয়ে বেশী সমস্যা করবে আমি সেই সকল জাত থেকেও দুরে থাকবো। ট্রেনিং এ যদি এই সব ঝামেলা মাথায় নিয়ে আগাতে হয় তাহলে সারাদিন কাজকর্ম বাদ দিয়ে কবুতর নিয়ে পড়ে থাকতে হবে। আর আমার ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা হলে, আমি যেটা করতাম, সেটা হলো, কবুতরটিকে কয়েক দিন মোটেও আর উড়াতাম না এবং চেষ্টা করতাম তার এই বদ অভ্যাস ঠিক করার, যদি না হতো তাহলে ওটাকে দিয়ে আর উড়ানোর চেষ্টা করতাম না। যেভাবে যান্ত্রিক জীবনে হাইরাইজ বিল্ডিং এ শহরে ভরে যাচ্ছে, তাতে করে আমাদের বর্তমানে টেম্পার ও অতিরিক্ত বাজিছাড়া কবুতর পালন করা ছাড়া উপায় নেই।
অবশ্য আর একটি ব্যায়বহুল পদ্ধতি আছে, যদি একান্তই বাম ছাড়া কবুতর নামানো সম্ভব না হয়, তাহলে একচ একটা বাঁশের বদলে এক ধরনের লৌহার পাইপের মধ্যে পাইপ ঢুকায়ে দিয়ে বাম তৈরী করা হয়, যেটা প্রয়োজন মত ধীরে ধীরে উচ্চতা বাড়ানো কমানো যায়, কিছুটা রেডিও এন্টিনা ও ফোল্ডিং মাছ ধরা ছিপের মত। ফলে কবুতর বামে নামার পরে, ধীরে ধীরে বামের উচ্চতা নীচের থেকে কমায়ে ফেলে ছাদের খবু কাছাকাছি আনা হয় এবং তখন কবুতর সহজে ছাদে নেমে ঘরে ঢুকতে পারে।
যা হোক বাম বিষয়ে আর কোনো আলোচনা এখানেই সমাপ্ত।
কবুতর উড়ানোর ট্রেনিং আমার কাছে সব থেকে সোজা এবং সহজ কাজ, কারন আমি মনে করি একজন কবুতর পালকের কিছুই করার থাকে না, যদি তার কবুতর ভাল ব্লাড লাইনের না হয়। আমার কাছে ট্রেনিং মানে কবুতরের কিছু খারাপ অভ্যাস যাতে না হয় এবং কিছু ভাল অভ্যাস তৈরী করায়ে দেওয়া। একজন কবুতর পালক কবুতরের জাতের কিছু খারাপ দোষ কখনই ১০০% পারবে না বদলে দিতে অথবা কোনো ভাল গুন তৈরী করতে, যদি না ব্লাড লাইনে এইসব গুন থাকে।
আমি ধরে নিচ্ছি, এ পর্যন্ত আমরা যে কয়টি পর্ব অতিক্রম করেছি, তাতে নতুন কবুতর পালকরা কিছুটা হলেও ধারনা করতে পেরেছেন, কি ধরনের হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর নিয়ে সহজে ট্রেনিং দেওয়া যাবে এবং ভাল ফল বের করে আনা সম্ভব। তবে আমাদের সবারই একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে, শূধু ভাল জাতের কবুতর হলেই যে ভাল ফল পাওয়া সম্ভব তা কিন্তু না, যেমন একজন ভাল কবুতরবাজ কে খুটিনাটি সহজ কয়েকটি বিষয় অবশ্যই জানতে হবে, যেমন, যেদিন কবুতর উড়াবেন, সেই দিনটা মোটামুটি কেমন যাবে? এবং সুস্থ ও ফিট কবুতর উড়ানোর জন্য উপযোগী কিনা? তার মানে ভাল রাস্তা না হলে আপনি যতভাল গাড়ী নিয়ে রাস্তায় বের হোন না কেন, ভাল গাড়ী চালাতে পারবেন না। দিনের কখন? সকালে, দুপুরে অথবা বিকালে কখন কবুতর ট্রেনিং আরম্ভ করা হবে, সেটাও বিভিন্ন দিক মাথায় রেখে আমাদের নির্ধারন করা দরকার হয়ে পড়ে। তাছাড়া ট্রেনিং এ সহজ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হয়, যেমন, কবুতরের জাত, বয়স, আবহাওয়া, তাপমাত্রা, দিনের দৈর্ঘ্য, ফ্লাইং স্টাইল কেমন? ইত্যাদি ইত্যাদি।সর্বপরি কবুতর যদি নতুনভাবে সংগ্রহ করা থাকে, তবে অবশ্যই যার কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে, তার দেওয়া গাইড লাইন অনুযায়ী মেনে ট্রেনিং দেওয়া উচিৎ, তাহলে ফল অনেক ভাল হবে এবং সমস্যা হওয়ার সম্ভবনা কম থাকে।
---------------- চলবে ।
ধন্যবাদ, ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য।
*** বস্তা দাবড়া দিয়ে কবুতরকে ১-২ ঘন্টা উড়ানো যায় কিন্তু যত ভাল চেহারার ও ভাল মার্কিং এর কবুতর হোক না কেন, জাতের রক্তের মধ্যে উড়া না হলে ভাল মানের উড়ানো সম্ভব না।

ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

No comments:

Post a Comment

কবুতরের হোমমেড হ্যান্ডফিডিং ফর্মুলা

বরাবরের মতো এইবারও বাচ্চাগুলাকে ওদের বাবা-মা খাবার খাওয়ায়...কিন্তু তারপরেও, আমি প্রতিদিনই ওদের একবার করে হ্যান্ডফিডিং করাই ওদের সুস্বাস্থ...