এক সময় খুব জোর দিয়ে বলা হতো, গিরিবাজ কবুতর মানেই বাজি থাকতে হবে এবং এটাই ধর্ম । কত ধরনের কত মানের বাজি যে আছে তার ঠিক ঠিকানা নেই, যেমন, আঞ্চলিকভাবে বিভিন্ন নামে পরিচিত কিছু বাজি, খাড়া-বাজি, চলতি-বাজি, সেলাই-বাজি, সড়কি-বাজি, ট্যায়ার-বাজি, হাত-বাজি, ম্যাঠেম-বাজি, লাথি-বাজি, বাম-বাজি, স্ক্রু-বাজি আরো যে কত ধরনের বাজি আছে তার ঠিক নেই। এইসব নাম থেকেই বুঝা যায় কবুতরটি কি ধরনের বাজি খায়? যেমন, হাত-বাজি মানে হাতের থেকে ছাড়লে বাজি খায়, ম্যাঠেম-বাজি মানে মাটিতে বাজি খায়, হা হা হা। তার মানে বুঝা যাচ্ছে আগেকার দিনে উড়ার সময়ের থেকে বাজির বিষয়টাকে বেশী প্রাধান্য দেওয়া হতো, এখন যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে এই ধারনাগুলি বিলুপ্ত হওয়ার পথে এবং মানুষ এখন শুধু জানতে চায় কত বেশী সময় উড়ে নামলো? আমি যখন প্রতিযোগীতায় উড়াই তখন যে সকল পর্যবেক্ষকরা আসেন, তাঁদের কাছে গল্পের ছলে বহুবার কৌতুহল নিয়ে জিজ্ঞাসা করেছি, ওমুক তো সেদিন ভালই উড়ালো, তা কবুতরের উড়ার ষ্টাইল আর বাজি কেমন? বাজির গুন সম্পর্কে ভাল কোনো মতামত দু-একজন বাদে তাঁদের কাছ থেকে আজও পাইনি। তার মানে কম বেশী সবাই ধীরে ধীরে বুঝতে শিখেছে, বাজিওলা কবুতর নিয়ে প্রতিযোগীতায় অংশগ্রহন করা কঠিন একটা কাজ। তার চেয়ে বরং পাতলা বাজির কবুতর পালন করা শ্রেয়। অবশ্য এখনও অনেকেই বাজিকে বেশিক্ষন উড়ার হাতিয়ার হিসাবে ব্যাবহার করেন, তাদের ধারনা কবুতর যখন নীচের দিকে নামতে চাইবে, তখন বাজির তোড়ে আবার উপরে উঠে যাবে। তবে আমার ধারনা, এই ধরনের জাতের কবুতর দিয়ে এই ধরনের ঘটনা তৈরী করা অনেক সময় কঠিন হয়ে দাড়ায়। কেননা, দেখা গেছে, অনেক সময় বাসা-বাড়ির উচ্চতা অনেক সময় ফ্যাকটর, যেমন এই ধরনের বাজি-ওলা কবুতর নীচু ছাদে বা বামে নামতে গেলে তখনই বাজি ধরে উপরে উঠে যাবে, কিন্তু উচু দালানের ক্ষেত্রে ঐ উচ্চতায় নেমে আসা তার জন্য সহজ হয়ে যায়, ফলে উচু দালান থেকে এই জাতের কবুতর বাজির তোড়ে দীর্ঘ সময় উড়ানো অনেক সময় সম্ভব হয়ে উঠে না, তাছাড়া একবার কষ্ট করে নামা ভালভাবে রপ্ত করে ফেলতে পারলে ঐ কবুতরের কাছ থেকে এই ধরনের সুবিধা পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। আমি বরাবরি অতিরিক্ত বাজির বিপক্ষে, কেননা, আমার ধারনা প্রতিটি বাজি করতে যেয়ে কবুতর যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়ে, ফলে দীর্ঘ সময় দম করতে সমস্যা হয়। ------------- চলবে ।
ধন্যবাদ।
ছবি ও ভিডিও
লিখেছেন -
No comments:
Post a Comment