গত পর্বের সুত্র ধরে এই পর্বে প্রথমে হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের
মেমোরী / স্মরনশক্তি নিয়ে আরম্ভ করতে হবে, যা হোক আমরা অনেকেই একটা কথা বলি
হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের যদি মেমোরী না থাকে তাহলে সেই কবুতর না পালন
করাই ভাল। একথা্টা যেমন সত্য তেমন আবার দেখা গেছে অতিরিক্ত মেমোরী থাকা
হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর খুব একটা ভাল পারফর্ম করে না। কারন হিসাবে আমার
কাছে যা মনে হয়েছে, তা হলো এই ধরনের অতিরিক্ত মেমোরীওলা কবুতরগুলি বেশী
ঘরমুখো, ফলে বেশীক্ষন না উড়ে তাড়াতাড়ি বাসায় নেমে পড়ার জন্য অস্থির থাকে।
তাই কোনো কিছুই অতিরিক্ত ভাল না। ধরে নিলাম আপনার কবুতর ছোটো বেলায় ট্রেনিং
এর সময় অতিরিক্ত মেমোরী থাকার জন্য হারালো না, তাতে কি, যদি পরিনত বয়েসে
এসে ভাল পারফর্ম না করে। মেমোরী থাকার যে সব সুবিধা আছে, তারমধ্যে অন্যতম,
খুব অল্প সময়ের মধ্যে কবুতর বাসা চিনে ফেলে, ফলে কবুতর পালকের কবুতর হারায়ে
যাওয়ার টেনশন কম থাকে। এছাড়া মেঘ-বৃষ্টি-কুয়াশা অথবা বাজ পাখির দাবড় খেয়ে
হারায়ে আবার ফিরে আসার সম্ভবনা বেশী থাকে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, একটি কবুতরের
যে ভাল মেমোরী আছে, তা বুঝবো কিভাবে? কবুতর দেখে এটা বুঝাও খুব কঠিন, তবে
কিছু কিছু লক্ষন দেখে ধারনা করা যায়, তার মধ্যে অন্যতম একটি বৈশিষ্ট
কবুতরগুলির মাথা কম গোল আকৃতির হয় এবং একটু বড় টাইপের মাথা হয়। ক্ষেত্র
বিশেষ নাকের ফুল একটু বেশী ফোলা হয়। তাছাড়া দেখা গেছে বুনো, কালো, মাছিয়া
ইত্যাদি এবং কালশীরা প্রজাতির কবুতরের একটু বেশী মেমোরী ।সোজা কথা, একটু
জংলিটি টাইপের কবুতরগুলির বেশী মেমোরী হয়। আর যে গুলো আহ্লাদে টাইপের ও
সৌখিন টাইপের সুন্দর দেখতে এগুলোর একটু কম মেমোরী হয়। আসলে একটি কবুতরের
মেমোরী কতটা ভাল তা বের করার একমাত্র ও নির্ভরযোগ্য পন্থা হলো, কয়েক পত্তন
বাচ্চা করে সেই বাচ্চা বাসা চেনানোর থেকে আরম্ভ করে শেষ পর্যন্ত পরিনত বয়স
পর্যন্ত প্রাকটিক্যাল উড়ায়ে দেখে, তার পর নিশ্চিৎ হতে হয় যে ভাল মেমোরী ও
ভাল দমের কবুতর, এর আগে সম্ভব না। তাছাড়া দেখা গেলো ট্রেনিং এর প্রথম দিকে
খুব ভালভাবে নীচে ও মধ্য আকাশে উড়ায়ে বাসা চিনালেন, অথচ সুপার টিপে যেয়ে
দিক হারা হয়ে অন্যত্র চলে গেলো ও ফিরে আসলো না। তাই আমি একটি কথা সব সময়
বলি, একটি ভাল কবুতরের দীর্ঘ সময় উড়ার ক্ষমতা যেমন থাকা দরকার, তেমনি বাসায়
ফিরে আসাও দরকার। তাই, একটি ভাল জাতের হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতরের যেমন
দম থাকতে হবে, ঠিক পাশ্বাপাশি প্রয়োজনীয় মেমোরীও থাকতে হবে।প্রয়োজনীয়
মেমোরী এই কথাটা এই জন্য বল্লাম আপনার কবুতরের যত বেশী মেমোরী থাকুক না
কেন, মেঘের পাল্লায় পড়ে দূরে কোথাও পথ হারায়ে গেলে হয়তো বা ফিরে আসবে না।
তাই শুধু মেমোরীর পিছনে ঘুরে সময় নষ্ট না করে সব দিক বিবেচনায় এনে কবুতর
পালন করা শ্রেয়। এইজন্য অভিজ্ঞ ব্রিডাররা ক্রসব্রিড ও বিভিন্ন জাতের মধ্যে
সেট মিলায়ে মেমোরী ও উড়ার মধ্যে মিলতাল তৈরী করে বাচ্চা তোলার চেষ্টা করেন।
হা হা হা, যেতে যেতে এবার আমার মেমোরীতে থাকা কিছু তথ্য দিয়ে আজকের মত ইতি
টানতে চাই, সেটা হলো আমি অনেক আগে ইন্টারনেটের একটি রিসার্চ পেপারে
পড়েছিলাম যে, রেসার হোমার কবুতর তার স্মৃতিতে ১০০০-১২০০ মত ছবি মনে রাখতে
পারে এবং ঠিক তার পাশ্বাপাশি হাইফ্লাইয়ার গিরিবাজ কবুতর মাত্র ৪০০-৪৫০ মত
ছবি তার স্মৃতিতে ধারন করে রাখতে পারে। এছাড়া আমি তখন এও জেনেছিলাম, কবুতর
নাকি সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি অবস্থান চিনে ও নাকের উপরে থাকা ম্যাগনেটিক
ফিল্ড এর সাহায়্যে বাসা খোজার কাজে ব্যাবহার করে। বিষয়গুলি কতটা সঠিক এটা
আমি ১০০% নিশ্চিৎ না, কারন ইন্টারনেটে বহু ভুল ও আজগবি তথ্য থাকে, তবে এই
ধরনের জটিল তথ্য নিয়ে বেশী কাজ করেন যাঁরা রেসিং এর সাথে জড়িত।
(০৩). বাজী ওলা কবুতর ............................. চলবে ।
ধন্যবাদ।।
ছবি ও ভিডিও
লিখেছেন -
No comments:
Post a Comment