Thursday, 11 July 2019

ট্রেনিং পর্ব ২৫

কবুতর দিনের কোন সময়টা ট্রেনিং এর জন্য ভাল? এই প্রশ্নটা কমবেশী সবার মাথায় ঘুরপাক খায়। অবশ্য আমার নিজের ধারনা, এই ধরনের নির্দিষ্ট কোনো বাধা ধরা নিয়ম নেই। তবে, সাধারনত শীতকালে দুপুর বা বিকালের দিকে না উড়ানোই বুদ্ধিমানের কাজ, যদি কবুতর মোটামুটি উড়ার জন্য তৈরী হয়ে যায়। যখন একদম প্রথম ট্রেনিং আরম্ভ করা হয়, তখন অবশ্য বিকাল ও দুপুরে উড়ালে সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা যায়, আমি প্রায় সময় বলি, ট্রেনিং এর প্রাথমিক অবস্থায় কবুতরের ওজন যেন বেশী থাকে, তাহলে ওজনের কারনে কবুতর বাসা ছেড়ে বেশী দূরে যেতে পারবে না, ফলে হারায়ে যাওয়ার সম্ভবনা কম থাকবে। পাশাপাশ্বি দুপুর অথবা বিকালে নতুন কবুতর হারালে, বাড়ী খোজার সময় ও সুযোগ কম পায়, ফলে রাত্রে মানুষের হাতে ধরা পড়ার সম্ভবনা বেশী থাকে, তা ছাড়াও ভুতুম প্যাচাসহ বিড়ালের আক্রমনের শংকা থাকে। আসলে সব দিকেই বিপদ, একমাত্র ভাগ্য ভাল না থাকলে কিছুই করার থাকে না।
অনেকে ট্রেনিংএ বিকালে ছেড়ে উড়াতে উড়াতে দুপুরে উড়ানো আরম্ভ করেন, তারপর আরো ভাল হলে ধীরে ধীরে সকালের দিকে কবুতর ছাড়ার অভ্যাস করান। এই কারনে দেখা গেছে, বিকালে উড়ালে সন্ধায় নামানো, আবার দুপুরে উড়ায়ে সন্ধায় নামানো এবং সর্বশেষে সকালে উড়ায়ে সন্ধায় নামানোর অভ্যাস করান। কবুতর এই যে প্রথম থেকে সন্ধায় নামার অভ্যাস গড়ে তোলার ফলে ধীরে ধীরে বিকাল থেকে দুপুরে, দুপুর থেকে সকালে ছাড়ার ফলে কবুতর অভ্যাসের কারনে অনেক ভাল পারফর্ম করে। সোজা কথায়, কবুতরকে সময় জ্ঞান দিয়ে বোকা বানানো, আর কি, হা হা হা, ওর অভ্যাস হয়ে যাবে অন্ধকার হলে বাসায় নামতে হয়, তার আগে না। তবে যা কিছুই করা হোক না কেন, অবশ্যই জাতের মধ্যে উড়ার ক্ষমতা থাকতে হবে।
আমি এটাও দেখেছি এই পদ্ধতিকে খুব ভালভাবে ট্রেনিং করানোর ফলে, অতিরিক্ত মেঘ আসায় আকাশ অন্ধকার হওয়ার ফলে কবুতর নীচে নেমে আসতে।
কবুতরকে ভয় দেখানোর জন্য আমরা অনেকেই লাঠির সাথে কালো অথবা বিভিন্ন রঙের কাপড় বেধে নেই, যাতে করে কবুতর ভয় পায় এবং উপরে উঠে যায়। অনেকে মনে করেন, এই পদ্ধতিতে শুধু মাত্র কবুতরকে দাবড়ানোই প্রধান কাজ, আমি কিন্তু সেটা মনে করি না, আমি এটাও মনে করি নতুন ট্রেনিং এর সময় কবুতরগুলি অনেক দূরের থেকে হাতে থাকা নাড়ানো লাঠির মাথায় কাপড় দেখে বাসা চিনতে সহজ হয়, তাই কবুতর যখন উপরে উঠে যায়, তখন মাঝে মাঝে লাঠিটা মাথার উপর ধরে দেখানো ভাল। অবশ্য অনেকেই স্থায়ীভাবে বাশের মাথায় লাল সহ বিভিন্ন রঙের কাপড় পতাকার মত বেধে ছাদের উপর লটকায়ে রাখেন, যেন কবুতর উপর থেকে দেখে বাসা চিনতে পারে। ইদানিং অবশ্য এই পদ্ধতি অনেকেই ব্যবহার করার ফলে, কবুতর বিভ্রান্তিতে পড়ে যাচ্ছে, তাই উপকার শতভাগ পাওয়া যাচ্ছে না।
----------------- চলবে ।
ধর্য্য ধরে সঙ্গে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
*** নতুন পালকরা সাবধান, এখন নতুন বৃষ্টি আরম্ভ হয়েছে, তাই নতুন কবুতর লফ্টে ঢুকানোর আগে মূল লফ্টের থেকে দূরে ১৫-২০ দিন মত পালন করার পর যদি মনে হয় নিরোগ তবেই মূল্য লফ্টে দেওয়া উচিৎ। তাছাড়া প্রত্যেক বিক্রেতা ও দাতার নৈতিক দ্বায়িত্ব যদি তার লফ্টে রোগ ব্যাধি আক্রান্ত থাকে অথবা অতিক্রম করেছে, সেটা সংগ্রহকারক কে খোলা মেলা জানানো, তাতে সংগ্রহকারক সতর্ক থাকবেন এবং সেই মোতাবেক পদক্ষেপ নেবেন।



ছবি ও ভিডিও

লিখেছেন -
Khulna Highflyer

No comments:

Post a Comment

কবুতরের হোমমেড হ্যান্ডফিডিং ফর্মুলা

বরাবরের মতো এইবারও বাচ্চাগুলাকে ওদের বাবা-মা খাবার খাওয়ায়...কিন্তু তারপরেও, আমি প্রতিদিনই ওদের একবার করে হ্যান্ডফিডিং করাই ওদের সুস্বাস্থ...