পাখিকুলের ডিম পাড়ার প্রথম শর্ত “বিশ্বাস” ও “ভরসা”। হা, যখন একটি মায়া
কবুতর ডিম পাড়ার জন্য বিশ্বাস ও ভরসা পায় যে, সে ডিম পাড়লে তার সংগী
হিসাবে আর একটি কবুতর ডিম তা দেওয়ার থেকে আরম্ভ করে বাচ্চা লালন-পালন করতে
সহযোগীতা করবে। তখন তার সংগী মেয়ে হোক পুরুষ হোক বা অন্য জাতের কবুতর হোক
এটা কোনো ব্যাপার না। এখনো পর্যন্ত আমি দেখি নাই যে একটি মায়া কবুতরকে, সে
একা একা থাকাকালীন সময়ে ডিম পেড়েছে। একটু চিন্তা করলেই আমরা বুঝতে পারবো,
মায়া কবুতর মায়া কবুতর এক সাথে থেকেও ডিম পাড়ছে, কিন্তু সেই ডিমে কোনো
বাচ্চা হবে না এবং এর থেকে এটা প্রমানীত যে, কবুতরের ডিম পেটে আসার জন্য বা
পেটে ডিম তৈরী হওয়ার জন্য নর মায়ার যে ম্যাটিং এর বিষয়টি জড়িত তা না হলেও
চলে। এছাড়া এমনও দেখা গেছে কবুতর আকৃতির পুতৃল অথবা লফ্টে আয়না থাকলেও অনেক
সময় ডিম পেড়ে দিয়েছে। আয়নায় নিজের চেহারা দেখেও অনেক সময় সংগী ভেবে ডিম
পাড়তে দেখা যায়। ঐ যে প্রথমে বলে এসেছি বিশ্বাস ও ভরসা।
বয়স ও
শারীরীক অযোগ্যতা জনিত কারনে সাধারনত ডিম না পাড়ার প্রধান কারন হিসাবে আমরা
সাধারনত চিহ্নিত করি, কিন্তু আমি মনে করি এর পরের বিষয় হচ্ছে “বিশ্বাস” ও
“ভরসা”, যেখানে মায়া কবুতরটি যদি কোনো কারনে বিশ্বাস হারায়, তখন অনেক সময়
ডিম পাড়া বন্ধ করে দেয়। এই কারনে দেখেছি সুস্থ সবল কবুতরও অনেক সময় ডিম
পাড়া বন্ধ করে দিতে। অনেক সময় দেখা গেছে ঘন ঘন জোড় ভাংগা ও লফ্ট পরিবর্তনের
কারনেও বাসার প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস হারায়ে ডিম পাড়া বন্ধ করে দিয়েছে।
এছাড়া আমি আরো একটি বিষয় লক্ষ্য করেছি, সেটা হলো যে সকল জাতের কবুতর অনেক
বেশী সময় আকাশে উড়ে, সেই সব জাতের কবুতরও বছরে আর দশটা জাতের কবুতর থেকে
কম ডিম পাড়ে। আমার কাছে মনে হয়, একটি কবুতর যদি ৭/৮ ঘন্টা উড়ে তবে তার ডিম
কে তা দেবে ও বাচ্চাদের কে মানুষ করবে? এর থেকে প্রকৃতিই বোধ হয় ভাল
কবুতরের বছরে ডিম পাড়ার পরিমান কম দিয়ে দিয়েছে।
আজ আমি নতুনদের সাথে
একটি ছোট্ট বিষয় শেয়ার করবো, সেটা হলো আপনারা যদি কখনও প্রয়োজন বোধ করেন
যে, মায়া কবুতরটির জোড় পরিবর্তন করে নতুন নতুন জোড়া দেওয়ার দরকার, তাহলে
উচিৎ হবে, মায়া কবুতরটিকে তার পুরাতন খোপে সব সময় রেখে নতুন নতুন নরে
পরিবর্তন করা, তাতে মায়া কবুতরটি পুরাতন খোপের বা খাঁচার প্রতি বিশ্বাস ও
আস্থা হারাবে না এবং সহজে ডিম পাড়া বন্ধ করবে না, না হলে অনেক সময় দেখা যায়
অনেক অল্প বয়সে মায়া কবুতর ডিম পাড়া বন্ধ করে দিয়ে রিজেক্ট হয়ে গিয়েছে।
তাছাড়া আমাদের সব সময় লক্ষ্য রাখার দরকার, যেন লফ্টের আশেপাশে এমন কিছু না
থাকে যাতে করে কবুতর ভয় পেয়ে ডিম পাড়ার থেকে বিরত থাকে, যেমন, কুকুর বিড়াল
ইদুর কাক ইত্যাদির আনাগোনা। এছাড়াতো আমার চিন্তায় আছে আরো সুক্ষ সুক্ষ
ব্যাপার যেগুলো একটি মায়া কবুতরকে ডিম পাড়ার বিশ্বাস হারাতে পারে, এগুলো আর
এখানে উল্লেখ করলাম না, কেননা, হয়তোবা অনেকের কাছে হাস্যকর মনে হবে😆😆। আমি এও জানি কবুতরের বিশ্বাস আর ভরসার কথা শুনে অনেকেই মিট মিট করে হাসছেন😆😆
ধন্যবাদ।
লিখেছেন-সাবিবুর রহমান জিয়া।Khulna Highflyer
Saturday, 29 June 2019
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
-
ট্রেনিং এ কতগুলি কবুতর এক সঙ্গে উড়ালে ভাল হবে? এটার কোনো ধরা বাধা নিয়ম নেই, যার কবুতর যত বেশী তিনি সেইভাবেই ট্রেনিং দিবেন এটাই স্বাভাবিক। ...
-
বাংলাদেশে প্রাচীন কাল থেকেই কবুতর পালন হয়ে আসছে, বিভিন্ন সময়ে এই দেশে বিভিন্ন শাসন আমল থাকার কারনে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে কবুতর এ দেশে এসে...
-
কবুতরের ব্রিড নিয়ে অনেকের ই অনেক ভুল ধারনা আছে বলে আমার মনে হয়েছে যা নতুন কবুতর পালক দের মধ্যে বেশি লক্ষ্য করা যায় ।তাই এই ব্লগ টি লেখার কথা...
কবুতরের হোমমেড হ্যান্ডফিডিং ফর্মুলা
বরাবরের মতো এইবারও বাচ্চাগুলাকে ওদের বাবা-মা খাবার খাওয়ায়...কিন্তু তারপরেও, আমি প্রতিদিনই ওদের একবার করে হ্যান্ডফিডিং করাই ওদের সুস্বাস্থ...

No comments:
Post a Comment